ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর: ভারত ও অন্যান্য দেশে যখন মহিলাদের হিজাব পরা নিয়ে আপত্তি ও বিতর্ক চলছে সেখানে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল বাংলাদেশের হাসিনা পরবর্তী ডা ইউনূসের সরকার। সম্প্রতি তাদের এক ঘোষণায় বলা হয়েছে যে সব মহিলা পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীর সদস্যরা হিজাব পরিধান করে ডিউটি করতে চাইবেন, তাদের সে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের ইচ্ছুক মহিলা পুলিশ ও সেনাসদস্যদের মস্তক ও বুক আবৃত করা হিজাব পরিধানে কোনও বাধা রইলো না। এবার থেকে উর্দির সঙ্গে ম্যাচ করে হিজাব পরতে পারবেন ইচ্ছুক মহিলা সেনারা। সেনা কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে ভারতে পালিয়ে আসার পর বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে সামাজিক জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এবার সেনাবাহিনীর মহিলা আধিকারিক ও কর্মীদের ওপর থেকে হিজাব পরার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার।
অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেলের (এজি) কার্যালয়ের তরফে আভ্যন্তরীণ এক আদেশে হিজাব পরার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৩ সেপ্টেম্বর পিএসও কনফারেন্সে ইচ্ছুক মহিলা কর্মীদের উর্দির সঙ্গে হিজাব পরিধানের অনুমোদনের বিষয়ে একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার শাসনামলে সেনায় উর্দির সঙ্গে হিজাব পরিধানে নিষেধাজ্ঞা ছিল। এবার সেটি তুলে নেওয়া হল।
আদেশনুসারে, নীতিমালাটি চূড়ান্ত করতে মহিলা সেনা সদস্যদের (অফিসার, এএফএনএস ও অন্যান্য পদবি) ইউনিফর্মের (কম্ব্যাট ইউনিফর্ম, ওয়ার্কিং ড্রেস, শাড়ি) সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হিজাবের বাস্তব নমুনা, হিজাবের কাপড়ের ধরন, রং ও পরিমাপ তুলে ধরে বিস্তারিত বর্ণনা করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ইউনিফর্মের (কমব্যাট ইউনিফর্ম, ওয়ার্কিং ড্রেস, শাড়ি) সঙ্গে প্রস্তাবিত হিজাব পরিহিত অবস্থায় মহিলা সেনা সদস্যের রঙিন ছবি সংশ্লিষ্ট পরিদফতরে ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে।
১৯৭১ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করলেও দেশটিতে সেনায় মহিলাদের প্রবেশেধিকার দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। ২০০১ সালে মহিলাদের সেনায় প্রবেশের অনুমতি মেলে। তবে চিকিৎসা ও শিক্ষা সংক্রান্ত বিভাগেই প্রথমে এই নিয়োগ করা হত। ২০১৫ সালে জওয়ান ও আধিকারিক হিসেবে মহিলাদের নিয়োগ করা হয়। প্রথমে ৮৭৯ জন মহিলা সেনায় সৈনিক হিসেবে নিয়োগ পান। পরে বিমান বাহিনীতে মহিলাদের যুদ্ধ পাইলট হিসেবে নিয়োগ করা হয়।
উল্লেখ্য, ভারতের কর্ণাটকে শিক্ষার্থী মহিলাদের হিজাব পরা নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। হিজাব পরার স্বাধীনতার বিষয়টি শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছেছে।