নিউ ইয়র্ক, ২৫ সেপ্টেম্বর: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। প্রথম বৈঠকেই ড. ইউনূসের সরকারের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মঙ্গলবার রাত ৯টায় নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘ সদর দফতরে এই দুই নেতার মধ্যে বৈঠকটি হয়। পরে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বৈঠকের কথা জানায় হোয়াইট হাউস। হোয়াইট হাউস বলেছে, উভয় নেতাই যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, যার ভিত্তি অভিন্ন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং উভয় দেশের জনগণের মধ্যে শক্তিশালী বন্ধন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন দুই সরকারের মধ্যে আরও সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বাংলাদেশের নতুন সংস্কার এজেন্ডা বাস্তবায়নে অব্যাহত মার্কিন সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন বাংলাদেশ ও ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ‘পূর্ণ সহযোগিতার’ আশ্বাস দিয়েছেন। কীভাবে বাংলাদেশের ছাত্ররা আগের স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে এবং জীবন দিয়েছে, সেটি জো বাইডেনের কাছে বর্ণনা করেন ড. ইউনূস। দেশ পুনর্গঠনে তার সরকার জোরালোভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা দরকার হতে পারে বলে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে জানান প্রধান উপদেষ্টা। জো বাইডেন বলেন, দেশের জন্য যদি ছাত্ররা এভাবে ত্যাগ স্বীকার করতে পারে, তাহলে সেই দেশের জন্য আরও কিছু করা উচিত। এদিকে, রোহিঙ্গা সংকট ও বৈশ্বিক অভিবাসন সমস্যা নিয়ে অধিবেশনের ফাঁকে রাষ্ট্রসংঘের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ মায়ানমারে নিযুক্ত রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ দূত জুলি বিশপের সঙ্গেও বৈঠক করেন। এসময় তিনি দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ব্যাপক বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া এবং প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূল পরিস্থিতি তৈরিতে মায়ানমারের ওপর অব্যাহত চাপের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয় বৈঠকে। বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রাষ্ট্রসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা জনগণের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এমন একটি টেকসই সমাধান খুঁজতে সক্রিয়ভাবে নিয়োজিত থাকার আহ্বান জানান। একই দিনে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মহাপরিচালক অ্যামি পোপের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন তৌহিদ হোসেন। এই আলোচনার কেন্দ্রেও ছিল রোহিঙ্গা সংকট। উভয় পক্ষই বাস্তুচ্যুত মানুষের সুরক্ষা, মঙ্গল ও অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানোর উপায়গুলো খুঁজে বের করার ওপর জোর দেন।