অর্পিতা লাহিড়ী, কলকাতাঃ বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন জন্ম গ্রহণ করেন ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর অবিভক্ত বাংলার রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে এক অভিজাত পরিবারে। ১৯৩২ সালের একই তারিখে কলকাতায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বৃহস্পতিবার কলকাতায় এজেসি বোস রোডে রোকেয়া মিনারের সামনে বিশ্বকোষ পরিষদ এবং মা ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এক স্মরণ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এইদিন স্মরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ তথা পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান, প্রাক্তন সাংসদ তথা প্রাবন্ধিক মইনুল হাসান, বিশ্বকোষ পরিষদের সম্পাদক সাক্ষর সেনগুপ্ত, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল মতিন, আমজাদ হোসেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আমজাদ হোসেন, বুলবুল পত্রিকার সম্পাদক এস এম সিরাজুল ইসলাম, মা ফাউন্ডেশনের সম্পাদক শ্যামল সেনগুপ্ত সহ বহু বিশিষ্ট জনেরা।
ধর্মীয় প্রতিবন্ধকতা এবং সামাজিক কুসংস্কারে আচ্ছন্ন এক সময়। এই সময় মুসলিম নারী শিক্ষায় নতুন দিশা দেখালেন বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। উপস্থিত বিশিষ্ট জনেরা এইদিন তাঁদের বক্তব্যে বেগম রোকেয়ার জীবন ও বর্ণময় কর্মজীবনের বিভিন্ন দিকের প্রতি আলোকপাত করেন।
প্রাক্তন সাংসদ ও পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান নিজের বক্তব্যে বলেন, ‘বেগম রোকেয়াকে নিয়ে চর্চা এই বাংলা থেকে সম্পূর্ণ হারিয়ে গিয়েছিল এই কথা বলতে কোনও দ্বিধা নেই। এমনকি এই মহিয়সী নারীর ইন্তেকাল হয় কলকাতায়। অথচ তাঁর কবরের সন্ধান মেলে না তা হারিয়ে গিয়েছে।’ বেগম রোকেয়া তাঁর জীবন ও শিক্ষাকে নিয়ে লেখা নিবন্ধ যে খুব শীঘ্রই পুস্তক আকারে প্রকাশিত হতে চলেছে সেই কথাও জানান আহমদ হাসান ইমরান।
প্রাক্তন সাংসদ তথা প্রাবন্ধিক মইনুল হাসান পুবের কলমকে জানান, বেগম রোকেয়া একটা বিস্ময়, মাত্র ৫২ বছর বেঁচে ছিলেন, তার মধ্যে তিনি নারী জাগরণ ও নারী শিক্ষার জন্য যে কাজ করেছেন তা একজন মুসলিম নারী হিসেবে বিস্ময়কর। তিনি সংস্কার ভাঙতে চেয়েছিলেন। মইনুল সাহেবের কথায়, বেগম রোকেয়ার লেখা অনেক লেখা আছে কিন্তু তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ অবরোধবাসিনী।
অন্যদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল মতিন বলেন, একটা নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে বেগম রোকেয়াকে বাঁধা যাবে না। তাঁর কর্মকাণ্ড ছিল অনেক বিস্তৃত।
সমাজের বিশিষ্টজনেদের উপস্থিতিতে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াতের জন্ম ও প্রয়াণ বার্ষিকীতে উন্মোচিত হয় এই মহিয়সী নারীর বর্ণময় জীবন ও কর্মজীবনের নানা দিক।