ঢাকা, ৩ অক্টোবর: শেখ হাসিনার আমলে অনেককেই নানা কারণে বাংলাদেশ ছাড়তে হয়েছিল। হাসিনা পালানোর পর তারা ধীরে ধীরে দেশে ফিরছেন। দীর্ঘদিন পর মালয়শিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী। ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, সালামতে প্রিয় মাতৃভূমিতে এসে পৌঁছালাম। পরম করুণাময় এই প্রত্যাবর্তনকে বরকতময় করুন।’
মিজানুর রহমান আজহারী ২০২০ সাল থেকে মালয়শিয়ায় অবস্থান করছেন। গত আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর দেশে ফেরার ঘোষণা দেন তিনি। তখন তার ফেসবুক পেজে লিখেন, ‘অনেকে আমাকে মেসেজ করে ও ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে জানতে চেয়েছেন, আমি কবে দেশে ফিরব। আমি তাদের বলতে চাই, আমি দ্রুতই দেশে ফিরব। আপনাদের সঙ্গে দেখা করার অপেক্ষাতে রয়েছি আমি নিজেও। শিগগির সাম্য, মানবিকতার মুক্ত-স্বাধীন, বাংলাদেশে আমি আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাই।’
২০২০ সালে আজহারী মালয়েশিয়া চলে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর তাকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হয়েছিল। সে বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘পারিপার্শ্বিক কিছু কারণে এখানেই এবছরের তাফসির প্রোগ্রামের ইতি টানতে হচ্ছে। তাই, মার্চ পর্যন্ত আমার বাকি প্রোগ্রামগুলো স্থগিত করা হল। রিসার্চের কাজে আবারও মালয়েশিয়া ফিরে যাচ্ছি। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সুযোগ করে দিলে আবারও দেখা হবে ও কথা হবে ইনশাআল্লাহ।’ এরপর থেকে তিনি বাংলাদেশে আর কোনো ওয়াজ মাহফিলে যাননি।
তিনি গবেষণার কাজে মালয়েশিয়া গেছেন বলে ওই পোস্টে উল্লেখ করলেও হঠাৎ চলে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছিল নানা মহলে। এর কারণ হিসেবে তখন বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে লক্ষ্মীপুরে তার এক মাহফিলে ১২ জন ভারতীয় নাগরিকের ধর্মান্তরের ঘটনা আলোচনার সৃষ্টি করে। লক্ষীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার পানপাড়া গ্রামে আজহারীর মাহফিলে একই পরিবারের মোট ১২ জন সদস্য এক সঙ্গে ইসলাম গ্রহণ করা আলোচিত এই হিন্দু পরিবারটি এসেছিল ভারত থেকে। বাংলাদেশ পুলিশ ১২ জনকেই আটক করে ভারতে ফেরত পাঠায়। অপরদিকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও লোকসমাগমের কারণে বিভিন্ন জায়গায় তাকে ওয়াজ-মাহফিল করতে বাধা দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ ওঠে। তখন সরকারের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আজহারীকে জামায়াত-সংশ্লিষ্ট বলে অভিযোগ তোলেন; যা নিয়ে তখন ব্যাপক হইচই হয়েছিল। সব মিলিয়ে অনেকে ধারণা করেছিলেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে মিজানুর রহমান আজহারী দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন।