পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ মঙ্গলবারই বিএসএফ- (bsf) এর এক্তিয়ার বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রস্তাব পাস হয় রাজ্য বিধানসভায়৷ উত্তাল হয় বিধানসভা। তার পরে লর্ড সিনহা রোডের কার্যালয় থেকে বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠক করলনে বিএসএফের এডিজি ওয়াই বি খুরানা (BSF ADG YB Khurana)।
বিএসএফের এডিজি বলেন, ‘বিএসএফের প্রধান কাজ হল অনুপ্রবেশ রোখা। বিএসএফ কোনও তদন্তকারী সংস্থা নয়, তাই পুলিশের কাজে হস্তক্ষেপ করার প্রসঙ্গই ওঠে না। রাজ্য পুলিশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই চলে বিএসএফ।’
এডিজি আর বলেন, ‘দেশের প্রতিরক্ষায় প্রথম সারিতে রয়েছে বিএসএফ। এর অন্যতম কাজ হল বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্তে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বজায় রাখা। বিএসএফের ক্ষমতা সীমীত। কেবলমাত্র তল্লাশি, বাজেয়াপ্ত ও গ্রেফতার করতে পারে বিএসএফ।’
বিএসএফের এডিজি ওয়াই বি খুরানা বলেন, ‘বিএসএফের ক্ষমতা এখনও আগের মতোই সীমীত রয়েছে। কেবল এক্তিয়ার ১৫ কিমি থেকে ৫০ কিমি করা হয়েছে। কেন্দ্রের তরফে যে তিনটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, তার একটিতে সিআরপিসপির অধীনে তল্লাশি অভিযান, বাজেয়াপ্ত ও গ্রেফতার নিয়ে বলা হয়েছে। বাকি দুটিতে বিএসএফের ক্ষমতা নিয়ে বলা হয়েছে, যা হল অনুপ্রবেশকারীদের যাচাই করা ও প্রয়োজনে গ্রেফতার। নয়া নির্দেশিকায় বিএসএফের কোনও ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়নি। এই সম্পর্কে কোনও ভুল ধারণা থাকলে, আমরা তা দূর করতে চাই।”
গত ২১ অক্টোবর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেয়, এবার থেকে আন্তর্জাতিক সীমান্তের ৫০ কিমি পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে নিরাপত্তার খাতিরে নজরদারি চালাতে পারবে বিএসএফ৷ যে ক্ষমতা এতদিন ছিল ১৫ কিমি৷ স্বাভাবিকভাবেই অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে।
তৃণমূল কংগ্রেসের মত বেশ কিছু সরকার দাবি করে, এই সিদ্ধান্ত রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে৷ খর্ব করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যকে সমর্থন জানায় কংগ্রেস-সিপিএমের মত দলগুলি৷ এর পরই মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত বিরোধী প্রস্তাব পাস হয় রাজ্য বিধানসভায়৷
মঙ্গলবার বিধানসভায় তৃণমূলের বিধায়ক উদয়ন গুহ সীমান্তে মহিলাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ করেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে এডিজি বলেন, ‘এই ধরনের কোনও অভিযোগ উঠলে তা খতিয়ে দেখা হবে’। ‘
বিএসএফের (BSF) এক্তিয়ার-বিরোধী প্রস্তাব পাসের প্রস্তাবের পক্ষে পড়ে ১১২টি ভোট, বিপক্ষে ৬৩টি ভোট। কয়েকদিন আগেই সীমান্তের ১৫ কিমি এলাকা থেকে বাড়িয়ে বিএসএফের কাজের পরিসর ৫০ কিমি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর এর পর থেকেই প্রথম থেকেই যার তীব্র বিরোধিতা চলেছে রাজ্য সরকার।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে একাধিক চিঠিও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে।
সব মিলিয়ে বিএসএফ-এর এক্তিয়ার বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রস্তাব ঘিরে উত্তপ্ত রাজ্য- রাজনীতি।