পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া হুমকি চিঠির পর্দা ফাঁস হল এবার। এই ঘটনায় সামনে এল এক চিকিৎসকের নাম। ঘটনায় এক চিকিৎসক সহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ধৃত চিকিৎসক কেপিসি মেডিক্যাল কলেজে কর্মরত। বাড়ি রামমোহন রায় সরণীতে। সেইসঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই চিকিৎসকের গাড়ির চালক রমেশ ও পেশায় টাইপিস্ট বিজয় কুমার কয়ালকে।
মঙ্গলবার সকালে রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের বিজন সেতুর সামনে থেকে প্রথমে গ্রেফতার করা হয় বিজয় কুমার কয়ালকে। বিজয় পেশায় টাইপ রাইটার। তাকে জেরা করতেই মূল চক্রীর নাম সামনে আসে। রামমোহন রায় সরণীর চিকিৎসক অরিন্দম সেন তাঁকে এই চিঠি টাইপ করতে পাঠিয়েছিলেন। এরপরেই অরিন্দম সেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চিকিৎসককে জেরা করতে জানা যায়, তৃতীয় জনের নাম। তৃতীয় ব্যক্তি চিকিৎসকের চালক রমেশ।
ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, অরিন্দম সেন তাঁর গাড়িচালকের হাত দিয়ে ওই চিঠি পাঠিয়েছিলেন টাইপ রাইটারের কাছে। গত দু’বছর ধরে এরকম চিঠি একাধিক ব্যক্তিকে পাঠিয়েছেন ওই চিকিৎসক। এখনও পর্যন্ত মোট ৭ জনকে তিনি এইভাবে হুমকি চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জেরায় স্বীকার করেছেন। কিন্তু কেন পাঠিয়েছেন, তার কোনও কারণ জানা যায়নি।
এমনকী ওই চিকিৎসক জেরায় জানিয়েছেন, অনেক ক্ষেত্রে আক্রোশের জেরে তিনি চিঠি পাঠিয়ে থাকতেন। চিঠিতে প্রেরকের নাম হিসেবে উল্লেখ ছিল গৌর হরি মিশ্রের নাম। পুলিশ জেরায় জানতে চায়, কেন গৌর হরি মিশ্রের নাম নিয়ে চিঠি লেখা হয়েছিল? উত্তরে চিকিৎসক জানিয়েছেন, গৌর হরি মিশ্রকে অপদস্ত করতেই তাঁর নাম ব্যবহার করেছেন। এমনকী সংবাদ মাধ্যমের খবরের ওপর প্রভাবিত হয়েও তিনি এই ধরনের হুমকি চিঠি লিখতেন।
প্রসঙ্গত, স্পিড পোস্ট মারফত আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে একটি চিঠি আসে। যে চিঠি খুলতেই দেখা যায় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করেই এক লাইন ইংরেজি লেখা আছে। আর তাতে প্রেরকের নাম আছে গৌরহরি মিশ্র। চিঠিতে ঠিকানাও লেখা আছে। চিঠির ওই এক লাইনে লেখা রয়েছে, ‘Your husband will be killed. No body can save the life of your husband.’
চিঠির বয়ান, গৌরহরি মিশ্র, কেয়ার অব ডঃ মহুয়া ঘোষ, রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের কেমিক্যাল টেকনোলজি। আর এরপরই শুরু হয় তদন্ত। সেই সময় রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের কেমিস্ট্রির অধ্যাপিকা জানিয়েছিলেন, গৌরহরি তার ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্স। কিন্তু গৌরহরি এই ঘটনার সঙ্গে কোনওভাবে জড়িত থাকতে পারেন না। এই ঘটনায় প্রেরক ‘ফেক নাম’ উল্লেখ করেছেন।
এবার আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় হুমকি কেসে সামনে এল মূল চক্রীর নাম। তবে মূল অভিযুক্ত একজন চিকিৎসক হয়ে কেন এই কাজ করলেন তাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।