সুবিদ আবদুল্লাহ্ঃ অবহেলা চলছে ২৬৫ বছর ধরে। বাংলা-বিহার-ওড়িশার নবাবের সম্মানে যেন এটুকুই প্রাপ্য। কেন্দ্রীয় সরকার অথবা রাজ্য সরকার– কোনও সরকারের পক্ষ থেকে নূন্যতম সম্মান জানানো হয়নি স্বাধীনতার প্রথম শহিদ নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাকে। নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা স্মৃতিরক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে বহুবার অনুরোধ করা হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন ও রাজ্য সরকারের কাছে। অনুরোধ গৃহীত হয়নি।
রাজ্য সরকারের বক্তব্য– খোসবাগ হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইণ্ডিয়া’র অধীন। স্মৃতিরক্ষা কমিটি কেন্দ্রীয় সরকারের আর্কিওলজিক্যাল অফিস হাজারদুয়ারীতে অনুরোধ জানায়। অফিসার বিষয়টি ‘দেখা হবে’ বলে জানিয়েছেন– কেটে গেছে বহু বছর। নবাবের কবরে আজও বাংলা বা ইংরেজিতে নামফলক বসেনি। যেটা আছে তা ফারসী ভাষায়। স্বাভাবিকভাবেই দূরের দর্শনার্থীরা আজও চিহ্নিত করতে পারেন না কোনটি নবাবের কবর। ভরসা করতে হয় টু্রিস্ট গাইডের ওপর।
নবাবকে– নবাবের পরিবারকে অবহেলার এখানেই শেষ নয়। সম্মান পান না নবাবের মাতামহ আলিবর্দি খাঁও। কোনও নামফলক নেই তাঁর কবরেও। নবাবের সহধর্মীনি লুৎফুন্নেসার কবরও রয়েছে খোসবাগে। নবাবের পাশেই। সেই কবরেও নেই কোনও নাম ফলক অনুরোধ সত্ত্বেও।
শুধু তাই নয়– নবাবের পারিবারিক কবরখানা খোসবাগ সুরক্ষিতও নয়। সাধারন মানুষের অভিযোগ– দিনের আলো ফুরিয়ে অন্ধকার নামার সঙ্গে সঙ্গে কবরখানার চারপাশে বসে যায় সমাজবিরোধীদের জমাটি আড্ডা। জানা গেছে– কখনও কখনও এই আড্ডা বসে দিনের আলোয়। কবরের আশেপাশে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায় মত্ত-মাতাল। সমাধি দেখতে আসা টু্রিস্টদের অভিযোগ– কবরখানার সীমানা প্রাচীর আছে। রক্ষীও আছে। তারপরেও দিনের আলোয় মাতালরা ঘুরে বেড়ায় কবরখানার ভেতরে। গেট রক্ষীদের প্রচ্ছন্ন মদতে। ফলে ফ্যামিলি টু্রিস্টরা খোসবাগে আসতে ভয় পান।
নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পারিবারিক কবরখানা খোসবাগ। ভাগীরথী নদীর ওপারে মনোরম পরিবেশে কবরখানাটি গড়েন নবাব আলিবর্দী খাঁ। এখানে শেষ কবর হয়েছে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার প্রিয়তমা পbী লুৎফুন্নেসার। স্বাধীনতার পর মুর্শিদাবাদের পুরাতত্ত্বগুলো কিছু রাজ্য সরকার ও কিছু কেন্দ্র সরকারের অধীন চলে যায়। নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা স্মৃতিরক্ষা কমিটির সম্পাদক বিপ্লব বিশ্বাস জানাচ্ছেন– নবারের প্রতি এই অবহেলার কারন কেন্দ্র সরকারের উদাসীনতা।