চাকরিহারা অশিক্ষক কর্মীদের জন্য বিকল্পের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, পাশে রাজ্য সরকার

- আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার
- / 64
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: শীর্ষ আদালতের নির্দেশে চাকরি হারানো গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি কর্মীরা এই মুহূর্তে চরম সংকটের মধ্যে রয়েছেন। শীর্ষ আদালত যোগ্য ও অযোগ্য শিক্ষকদের ক্ষেত্রে ডিসেম্বর পর্যন্ত বেতন চালিয়ে যাওয়ার অনুমোদন দিলেও অশিক্ষক গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি কর্মীদের ক্ষেত্রে সেই সুযোগ দেয়নি। অথচ কারা যোগ্য এবং অযোগ্য এটাও নির্দিষ্ট করে দেয়নি। এই অবস্থায় এই পরিবারগুলির পাশে দাঁড়াল রাজ্য সরকার। তাদের জন্য বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করল রাজ্য। শনিবার চাকরিহারা গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি কর্মীদের একাংশ নবান্নে গিয়ে মুখ্য সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকের সময়ে টেলিফোনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি চাকরিহারাদের সঙ্গে কথা বলেন। নবান্ন সভাঘরে এই বৈঠক থেকেই এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, যতদিন না আদালতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত রাজ্য সরকার তাঁদের আর্থিক সহায়তা করবে। তবে মুখ্যমন্ত্রী এটাও স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্য সরকার আদালতের নির্দেশ এবং রায় মানবে।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান রেখেই রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। ডানলপ কারখানার বন্ধ শ্রমিকদের যেমন সরকার মাসিক আর্থিক ভাতা দেয়, তেমনভাবেই এখন গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি কর্মীদের সাহায্য করা হবে। এর সঙ্গে শিক্ষা দফতরের কোনও যোগ থাকছে না।
আরও পড়ুন: কোটায় নিট পরীক্ষার্থীর দেহ উদ্ধার! আত্মহত্যা না খুন খতিয়ে দেখছে পুলিশ
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গ্রুপ-সি-এর প্রাক্তন কর্মীরা প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপ-ডি-এর প্রাক্তন কর্মীরা ২০ হাজার টাকা করে পাবেন। শ্রম দফতর এই অর্থ সাহায্য করবে। শিক্ষা দফতর এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকছে না। মমতার কথায়, ‘আপনারা যদি সবাই এক থাকেন, তাহলে যতদিন না আদালতে মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে, ততদিন এই সহায়তা চলবে।’ প্রসঙ্গত, এ দিন চাকরিহারাদের তরফ থেকে গ্রুপ-সিদের জন্য ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। যদিও এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী তার সম্মতি প্রকাশ্যে জানাননি।
একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, আগামী মে মাসেই সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করবে রাজ্য। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশাপাশি অশিক্ষক কর্মীদের ক্ষেত্রেও এই আবেদন জানানো হবে। তিনি আশ্বাস দেন, আইন মেনেই তাঁদের পাশে থাকার চেষ্টা করবে রাজ্য সরকার।
প্রসঙ্গত, এসএসসি-র ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২৫ হাজারেরও বেশি শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী তাঁদের চাকরি হারিয়েছেন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ক্ষেত্রে ‘যোগ্য’ তালিকাভুক্তদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিলেও, অশিক্ষক কর্মীদের সেই সুবিধা দেয়নি আদালত। ফলে তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এবার তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে রাজ্য সরকার বিকল্প রোজগারের রাস্তায় হাঁটল।