Pahalgam Terror Attack: শহিদ জওয়ান ঝন্টু আলির পাথরঘাটা গ্রামে কান্নার প্রতিধ্বনি

- আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 126
শুভায়ুর রহমান: গ্রামের পাশ দিয়ে চলে গেছে কাঁটাতার। চোখের সামনে দেখতেন বিএসএফ কীভাবে দেশ সেবার কাজ করে চলেছেন। স্বপ্ন দেখতেন তিনিও সুযোগ পেলে দেশের জন্য কাজ করবেন। দেশ সেবা করতে গিয়ে শহিদ হলেন নদিয়ার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী গ্রাম পাথরঘাটার গ্রামের বছর ছত্রিশের যুবক ঝন্টু আলি শেখ।
মঙ্গলবার ভূস্বর্গ কাশ্মীর উপত্যকা রক্তাক্ত হয়। পহেলগাঁয়ে জঙ্গীদের গুলিতে (Pahalgam Terror Attack) প্রাণ যায় নিরীহ পর্যটকদের। ওই ক্ষত শুকনোর আগেই বাঙালি শহিদ যুবকের মৃতু। কাশ্মীরের উধমপুরের বসন্তগড়ে ভারতীয় সেনা ও পুলিশের যৌথ বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের গুলির লড়াই শুরু হয়। সন্ত্রাসীদের গুলিতে শহিদ হন নদিয়ার ঝন্টু আলি। সে ৬ প্যারা এসএফের সদস্য ছিলেন।

গ্রাম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝন্টুর বাবা সবুর আলি শেখ ও মা আখিরন বিবি ৩ ছেলে ও ১ মেয়েকে অভাব-কষ্টের মধ্যে দিয়ে বড় করে তোলেন। বাবা ছিলেন পেশায় দিনমজুর। অন্যের জমিতে কাজ করে সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতেন। যখন আশার আলো দেখলেন তখনই দুঃস্বপ্ন হানা দিল সবুর আলির পরিবারে বলছেন গ্রামবাসী।
পাথরঘাটা গ্রাম সূত্রে খবর, চাপড়া থানার বড় আন্দুলিয়া হাই স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে কলেজে প্রথম বর্ষে পড়াকালীন ২০০৯ সাল নাগাদ দেশ সেবার কাজে যুক্ত হন। চাকরি পাওয়ার দু’বছরের মধ্যেই ধাপাড়িয়া গ্রামের শাহনাজ পারভিনের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাঁদের দুই সন্তান রয়েছে বলে জানান স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ফরিদ আলি সেখ।
ঝন্টু আলি সেখের বড় ভাই রফিকুল সেখও ভারতীয় সেনায় কর্মরত। তিনিই ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদ বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রামের বাড়িতে দিলে কান্নায় ভেঙে পড়েন আত্মীয়স্বজন। প্রতিবেশী আবদুল মারুফ মণ্ডল বলেন, ‘খুবই মিশুকে, শক্তিমান, সাহসি ছেলে ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই সেনাবাহিনীতে কাজ করার স্বপ্ন দেখত। প্রতি বছর গ্রামের মেলায় আসত। এবারের মেলাতেও গত ফেব্রুয়ারি মাসে বাড়ি এসেছিলেন। এলাকার আরেক বাসিন্দা ফজলুর রহমান জানান, ছুটি পেয়ে বাড়িতে এলেই পাড়া-গ্রামের অনুষ্ঠানে মেতে থাকতো। সবার সঙ্গে মিশতেন।

ঝন্টুর বাবাও অসুস্থ। ছেলের মৃত্যুসংবাদ শোনার পর থেকেই শোকস্তব্ধ হয়ে গেছেন। মা শোকে পাথর। বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন এলাকাবাসী। সকলের প্রিয় ঝন্টু আর গ্রামের মেলায় ফিরবেন না ছুটি কাটাতে। মেনে নিতে পারছেন না এলাকাবাসী। শোকাচ্ছন্ন পাথরঘাটা গ্রাম। গ্রামের ছেলের মৃত্যু খবর চাউর হতেই সকলেই বিমর্ষ হয়ে পড়েছেন। পাথরঘাটা গ্রামের আকাশে-বাতাসে এখন শুধুই ‘কান্নার প্রতিধ্বনি।’