পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: উত্তরাখণ্ডের পর এবার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (ইউসিসি) আনতে চলেছে গুজরাত সরকার। ইউসিসি-র খসড়া তৈরি করতে মঙ্গলবারই একটি কমিটি গড়েছে গুজরাতের ভূপেন্দ্র প্যাটেল সরকার। পাঁচ সদস্যের ওই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জনাপ্রকাশ দেশাই। আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দেবে ওই কমিটি। গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, গুজরাতে ইউসিসি লাগু করতে প্যাটেল সরকার বদ্ধপরিকর। সবথেকে বড় কথা হল, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেশাইয়ের নেতৃত্বেই বিশেষ কমিটির সুপারিশে উত্তরাখণ্ডে ইউসিসি লাগু হয়।
মঙ্গলবার গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল বলেন, ‘সংবিধানের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, দেশের সর্বত্র অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করা হবে, যাতে সকলের সমানাধিকার সুনিশ্চিত করা যায়।’ আর তার পরেই রাজ্যে ইউসিসি আনার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও ঘোষণা করেন, পাঁচ সদস্যের কমিটি তৈরি করা হয়েছে ইউসিসি লাগু করার ব্যাপারে। আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে বিলটি কার্যকর করা হবে। উল্লেখ্য, গুজরাতে ধর্মান্তরণ বিরোধী একটি সার্কুলারও জারি রয়েছে। ফলে কোনও হিন্দু অন্য কোনও ধর্ম গ্রহণ করতে চাইলে সরকারের থেকে তাকে অনুমোদন নিতে হবে।
গত ২৭ জানুয়ারি থেকে উত্তরাখণ্ডে চালু হয়ে গিয়েছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। উত্তরাখণ্ড সরকারও এই ইউসিসি চালু করার ক্ষেত্রে ভরসা করেছিল সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জনপ্রকাশ দেশাইয়ের উপরই। ইউসিসি কার্যকর করার ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখতে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেশাইয়ের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করেছিল উত্তরাখণ্ড সরকার। সেই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছিল বিলের খসড়া। উত্তরাখণ্ড সরকারের দেখানো পথেই এবার হাঁটতে চলেছে গুজরাত।
সূত্রের খবর, উত্তরাখণ্ডের মতো এখানেও লিভ ইনকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। নিষিদ্ধ হচ্ছে একের বেশি বিবাহ। উল্লেখ্য, আরএসএস থেকে শুরু করে একাধিক কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বরাবর লিই ইনের মতো সম্পর্কে আপত্তি জানিয়ে এসেছে। তাদের বক্তব্য, এই ধরনের সম্পর্ক ভারতীয় সংস্কৃতির পরিপন্থী। তারপরও অবশ্য দু’রাজ্যেরই (উত্তরাখণ্ড ও গুজরাত) লিভ ইনকে আইনি বৈধতা দিল। রাজনৈতিক মহলের মতে, আসলে বিজেপি চাইছে যে কোনও উপায়ে শুধু মুসলিমদের নিশানা করতে। সেজন্যই তড়িঘড়ি এসব করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, উত্তরাখণ্ডে ইউসিসি আইন অনুযায়ী, লিভ ইন সম্পর্কে থাকা যুগলদেরও করতে হবে রেজিস্ট্রেশন। ঘর ভাড়া নিতে গেলে লাগবে বিশেষ শংসাপত্র। তাও আবার কোনও ধর্মগুরুর থেকেই নিতে হবে শংসাপত্রটি। এছাড়াও আগের কোনও সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটে থাকলে তার বিবরণও দিতে হবে যুগলকে। উত্তরাখণ্ডের ইউসিসি প্রণয়নের অধীনে চালু হয়েছে এই নতুন নিয়ম।