সেখ কুতুবউদ্দিনঃ রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ইতিমধ্যেই ১২টি ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসা চালু হয়েছে। আগামীতে আরও ২টি চালু হবে। তার মধ্যে হাওড়ার পাঁচলার মাদ্রাসাটি উদ্বোধনের অপেক্ষায়। আর দক্ষিণ দিনাজপুরে জমি সমস্যার জন্য এখন কাজ শুরু হয়নি। সেখানেও গড়ে উঠবে ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসা। চালু হওয়া ১২টির মধ্যে ১০টি মাদ্রাসায় পড়ুয়া ভর্তিতে রেকর্ড গড়েছে। যদিও বীরভূম ও উত্তর দিনাজপুরের ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসার পরিকাঠামোগত উন্নয়ন সহ ভর্তিতে পিছিয়ে রয়েছে। এই দুই মাদ্রাসাকে পরিকাঠামো-সহ সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থার জন্য সরাসরি জেলাশাসকদের বিষয়টি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি উপযুক্ত পদক্ষেপের নির্দেশ দিল রাজ্যের সংখ্যালঘু দফতর।
বুধবার রাজ্যের সংখ্যালঘু দফতরের সচিব ড. পি বি সালিম পুবের কলমকে বলেন, ১২টি মাদ্রাসা চলছে। আরও হাওড়ার আরও একটি মাদ্রাসার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। উদ্বোধনের অপেক্ষায়।
এদিন সমস্ত মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক, এজেন্সি কর্তাদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। মাদ্রাসার অনেক সমস্যাও রয়েছে। সেগুলি সমাধানের চেষ্টা করা হবে। পাশাপাশি তিনি বলেন, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের বেতন বাড়ানো হয়েছে। তাঁদের বকেয়া বেতনও মেটানো হয়েছে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসার বিল্ডিং এবং কক্ষগুলি মণীষীদের নামে রাস্তার পরামর্শ দেন তিনি। একইসঙ্গে পিবি সালিম বলেন, স্কুলে চারটি করে ক্লাব থাকবে। সেই ক্লাবগুলি এপিজে আবদুল কালাম, বেগম রোকেয়া, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কবি নজরুল ইসলামের নামে এই ক্লাবগুলি থাকবে। মাদ্রাসার পড়ুয়াদের নিয়ে যাতে ‘এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাকটিভিটি’ টাক্স করানোর উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন। মাসে একটি করে মিটিং করার বিষয়ে বলেন। যেখানে শিক্ষক কম রয়েছে, ওই মাদ্রাসায় টিচার দেওয়া হবে। নদীয়া, বর্ধমান, কোচবিহার ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসাকে পরিকাঠামো উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য টাকা দেওয়া হল। এদিন তিনি, মালদা ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসার প্রশংসা করেন। উত্তর দিনাজপুর এবং বীরভূম ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসাকে আরও উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। পাশাপাশি এই দুই মাদ্রাসাকে ডিএমদের খতিয়ে দেখে সহযোগিতা করার বিষয়েও অবগত করেন পিবি সালিম। এদিনের বৈঠকে ছিলেন সংখ্যালঘু দফতরের আধিকারিক ওবাইদুর রহমান, ডিএমই আবিদ হোসেন-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।
অন্যদিকে, এ দিন বৈঠকের পর রাজ্যের ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসার প্রধানশিক্ষকরা জানান, সংখ্যালঘু দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে মাদ্রাসার হালহকিকত নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
নবান্নের বৈঠকে প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে পৃথকভাবে সমস্যার কথা শোনেন। মাদ্রাসায় কতগুলি শিক্ষক শূন্যপদ, কত স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক কত, পড়ুয়ার সংখ্যা কত। বিল্ডিংয়ের পরিকাঠামো পর্যাপ্ত রয়েছে কি না। এ দিনের বৈঠকে উঠে এসেছে পড়াশোনার মানোন্নয়নের বিষয়টি। শিক্ষকরা জানান, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকরা বেতন পাচ্ছেন। এতে মাদ্রাসার পঠন-পাঠনে সুবিধা হবে। এ দিন আধিকারিকদের সামনে লাইব্রেরি, শিক্ষণ সামগ্রী, স্মার্ট ক্লাস রুম, অন্যান্য সুবিধা-সহ স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আরও চুক্তিভিত্তিক টিচার নিয়োগ করার আর্জি জানিয়েছেন প্রধানশিক্ষকরা।
উল্লেখ্য, রাজ্য সংখ্যালঘু দফতরের তরফে রাজ্যের ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসার প্রয়োজন অনুসারে বিল্ডিং সংস্কারের জন্য অর্থায়নের ব্যবস্থা করা হয়। বরাদ্দ টাকায় বহু মাদ্রাসায় কাজ সম্পন্ন করেছে বলে জানান প্রধানশিক্ষকরা।