পাটনা: বিহারে মদ নিষিদ্ধ। তারপরও মৃত্যু এড়ানো যাচ্ছে না। চোরাপথেই ঢুকে পড়ছে মদ। ঢুকে পড়ছে বিষমদও। আর এই বিষমদই ফের কাড়ল প্রাণ। গত চার দিনে বিহারের পশ্চিম চম্পারণ জেলায় বিষমদ পান করে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জেলা পুলিশ সুপার শৌর্য সুমন জানান, পশ্চিম চম্পারণের লোরিয়া থানা এলাকায় এই মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে। তবে সাতজনের মধ্যে ৫ জনের বিষমদে মৃত্যু হয়ে থাকলেও বাকি ২ জনের সম্ভবত অন্য কারণে মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে জানান তিনি। তাঁর কথায়, ‘প্রথম মৃত্যুর ঘটনা গত ১৫ জানুয়ারি হয়ে থাকলেও রবিবার বিষটি জানতে পারি আমরা। তবে ৭ জনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে ট্রাক্টরের ধাক্কায় ও দ্বিতীয় জনের মৃত্যু শারীরিক অসুস্থতার কারণে। বাকি ৫ জনের মৃত্যুর কারণ এখনও আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। যেহেতু সব দেহগুলির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে ফলে মৃত্যুর কারণ জানতে আমরা তদন্ত কমিটি তৈরি করেছি।’ যদিও স্থানীয় সূত্রে খবর, বিষমদ খেয়েই মৃত্যু হয়েছে তাদের। তাদের সকলের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াও সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। প্রসঙ্গত, ১৫ জানুয়ারি বিষমদের কারণে প্রথম মৃত্যুর খবরটি প্রকাশ্যে আসে। এরপর একে একে আরও ছ’জনের মৃত্যু হয় এই বিষমদের কারণেই। এই ঘটনায় তদন্তে নেমেছে পুলিশ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। পশ্চিম চম্পারণের ডিডিসি সুমিত কুমার বলেন, কেন এত জন মানুষের মৃত্যু হল তা খতিয়ে দেখা হচ্চে। তদন্ত কমিটিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই বিষয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। এই মৃত্যুর কারণ বিষমদ হয়, যে বা যারা এই বিষমদের চোরাকারবার করছে তাঁদের কাউকে রেহাত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সাল থেকে বিহারে মদ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও একাধিকবার বিষমদের কারণে মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। গতবছরের অক্টোবরে বিহারের সিওয়ান এবং সারণ জেলায় বিষমদের কারণে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। শুধু সিওয়ানেই মৃত্যু হয়েছিল ২৮ জনের। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার সেই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। রাজ্য পুলিশের ডিজি অলোক রাজের তত্ত্বাবধানে দু’টি বিশেষ তদন্তকারী দল গড়া হয়। ওই ঘটনায় ২১ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে সরব হয় বিরোধীরা। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব বলেন, ‘এটি গণহত্যা। মদ নিষেধাজ্ঞায় বিহার পুরোপুরি ব্যর্থ। এর দায় নীতীশ কুমারের সরকারের।’ সেই ঘটনার মাস কয়েকের মধ্যেই ফের বিষমদে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল বিহারে।