ওয়াশিংটন: দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে কারাগারে বন্দি ছিলেন কেনিয়ার যুবক মুহাম্মদ আবদুল মালিক বাজাবু। অবশেষে জেল থেকে মুক্ত হলেন তিনি। ইতিমধ্যে নিজ দেশ কেনিয়ায় ফিরেছেন বাজাবু। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন মঙ্গলবার আবদুল মালিক বাজাবুর মুক্তির বিষয়টি ঘোষণা করে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এক প্রতিবেদনে বলে, আল কায়েদার পূর্ব আফ্রিকার শাখার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ২০০৭ সালে কেনিয়ার মোম্বাসায় আবদুল মালিক বাজাবুকে গ্রেপ্তার করে কেনিয়া প্রশাসন। তারপর তাকে মার্কিন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছিল দেশটি। এর কয়েক সপ্তাহ পর তাকে কেনিয়া থেকে গুয়ানতানামো বে কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। তারপর থেকেই দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে মার্কিন কারাগারে বন্দি ছিলেন কেনিয়ার যুবক।
Read More: ইসরাইল ধ্বংস হবে: খামেনি
২০২১ সালে গুয়ানতানামোর পর্যালোচনা পরিষদ নির্ধারণ করে, বাজাবু যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য আর উল্লেখযোগ্য কোনো হুমকি নন। ফলে তাকে বন্দি রেখে দেওয়ার আর প্রয়োজন নেই। বাজাবুর কেনিয়ায় প্রত্যাবাসনের বিষয়টি গত মাসে পার্লামেন্টকে অবহিত করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। যদিও বাজাবুর মুক্তি প্রক্রিয়ায় সহায়তা করেছে ‘রিপ্রাইভ ইউএস’ নামের একটি মানবাধিকার সংগঠন। রিপ্রাইভ ইউএস জানিয়েছে, কেনিয়ার কর্তৃপক্ষ ও মার্কিন সামরিক বাহিনীর হাতে বাজাবু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অবশেষে তাকে মুক্ত করেছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
নাইন-ইলেভেন হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ শুরু হলে ২০০২ সালে কিউবার কাছে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে গুয়ানতানামো বে প্রতিষ্ঠা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত আইনি কাঠামোর বাইরের এই কারাগারে বন্দীদের অভিযোগ করার কিংবা নিজেদের আটকের কারণ জানার সুযোগ দেওয়া হয়নি। বন্দীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক মহলে এই কারাগারটি ব্যাপক সমালোচিত। তথাকথিত ‘কালো এলাকা’ বা সিআইএর গোপন ডেরাগুলো থেকে বন্দিদের এনে এই কারাগারে রাখা হতো। সেখানে বন্দিদের নির্যাতন করা হতো। একসময় এই কারাগারে বন্দীর সংখ্যা ছিল ৮০০। বর্তমানে ২৯ জন বন্দীর মধ্যে ১৫ জনকে স্থানান্তরের জন্য উপযুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ এ ধরনের কার্যক্রম অনুমোদন করেছিলেন।