আঙ্কারা: ইসরাইল সিরিয়ায় শান্তির সম্ভাবনা নষ্ট করছে বলে অভিযোগ তুলল তুরস্ক। দেশটির বিদেশমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, গাজা ধ্বংসকারী ইসরাইল এখন আমাদের সিরীয় ভাই-বোনদের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি।
হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি সশস্ত্র বিরোধী গোষ্ঠী নভেম্বরের শেষের দিকে একটি আকস্মিক আক্রমণ শুরু করে। বেশ কয়েকটি প্রধান শহর দখলের পর অবশেষে রাজধানী দামেস্ক দখল করলে আসাদ পরিবার নিয়ে রাশিয়ায় পালিয়ে যান। সপ্তাহান্তে আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার এই মিশনে সিরিয়ার কয়েকটি বিরোধী দলকে সমর্থন জানায় তুরস্ক। বৃহস্পতিবার তুরস্কের পার্লামেন্টে ভাষণ দিতে গিয়ে ফিদান বলেন, সিরিয়ার জনগণ যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শান্তি ও স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, ইসরাইল তাকে বিপন্ন করছে। গাজা ধ্বংসকারী ইসরাইল এখন আমাদের সিরীয় ভাই-বোনদের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি। তুর্কি বিদেশমন্ত্রীর মতে, সিরিয়ার জাতীয় ঐক্য, স্থিতিশীলতা, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সমৃদ্ধিকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দেই। এসব লক্ষ্য অর্জনে আঙ্কারা সব আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কাজ করবে।
Read More: গাজায় যুদ্ধবিরতি চায় ১৫৮ দেশ, বিরোধিতায় আমেরিকাসহ ৮ দেশ
আসাদ সরকারের পতনের পরপরই ইসরাইলি সেনারা গোলান মালভূমির কাছে বাফার জোন দখল করে নেয়। শুধু গোলান অঞ্চলেই নয়, সিরিয়াজুড়ে শত শত কাঠামোতে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবার থেকে ইসরাইলি বিমান বাহিনী সিরিয়ার ৩২০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। এর মধ্যে রয়েছে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ক্ষেপণাস্ত্র ডিপো, ড্রোন, হেলিকপ্টার, যুদ্ধবিমান, ট্যাংক, রাডার এবং নৌবাহিনীর জাহাজ।
এদিকে গতকালই সিরিয়াকে আর কখনই ভেঙে ফেলতে দেওয়া হবে না। কেউ যদি সিরীয় ভূখণ্ডের অখণ্ডতা নিয়ে আপস করতে চায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে তুরস্ক ব্যবস্থা নেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। আঙ্কারায় জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে পার্টি) এক কনভেনশনে তিনি এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, এই মুহূর্ত থেকে আমরা সিরিয়াকে আবারও বিভক্ত হতে দিতে পারি নাখ সিরিয়ার জনগণের স্বাধীনতা, নতুন প্রশাসনের স্থিতিশীলতা এবং সিরীয় ভূমির অখণ্ডতার ওপর যেকোনো ধরনের আক্রমণ হলে আমরা তার বিরুদ্ধে দাঁড়াব। এর আগে সিরিয়ার আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি তুরস্কের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে গোলান মালভূমিতে রাষ্ট্রসংঘের নির্ধারিত বাফার জোন এলাকায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর প্রবেশের নিন্দা জানায় তুরস্কের বিদেশ মন্ত্রক।
এমন প্রেক্ষাপটে তুরস্কের দিকে আঙুল তুলেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি দেশটির নাম উল্লেখ না করলেও আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদের সমর্থন দেওয়া তুরস্কের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, হ্যাঁ, সিরিয়ার একটি প্রতিবেশী রাষ্ট্র স্পষ্টতই এই বিষয়ে ভূমিকা পালন করেছে এবং তা অব্যাহত রেখেছে – সবাই এটি দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু মূল ষড়যন্ত্রকারী, মূল পরিকল্পনাকারী ও কমান্ড সেন্টার আমেরিকা ও ইহুদিবাদী সরকারের মধ্যেই নিহিত।