পুবের কলম প্রতিবেদক: উচ্চশিক্ষায় ঢালাও পরিবর্তন আনছে ইউজিসি। তাদের খসড়া রিপোর্টে তেমনই উল্লেখ করা হয়েছে।
উচ্চশিক্ষায় এবার একের বেশি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করা যাবে। পাশাপাশি দুটি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করলে পড়ুয়ার ক্রেডিট পয়েন্ট বাড়বে, যা তাকে ভবিষ্যতে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। স্নাতক স্তরে এক জন পড়ুয়া যদি একটি বিষয়ে ৫০ শতাংশ ক্রেডিট পয়েন্ট পায় তাহলে বাকি ৫০ শতাংশ স্কিল নির্ভর ও মাল্টিডিসিপ্লিনারি বিষয়ে পড়াশোনা করেও পেতে পারে।
ইউজিসি-র নতুন খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, স্নাতকের পাশাপাশি স্নাতকোত্তরেও দুটি ভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ থাকবে। এমনকী বছরে দুবার ভর্তি হওয়ার সুযোগ থাকছে। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি, জুলাই-আগস্ট বছরে এই দুই সেশনে ভর্তি হওয়া যাবে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে।
উচ্চশিক্ষায় হয়তো কোনও পড়ুয়া বেছে নিয়েছে ইতিহাসকে। আবার বায়োলজিও তার খুব পছন্দের সাবজেক্ট ছিল। এতদিন উচ্চশিক্ষায় এই দুটি বিষয় নিয়ে একসঙ্গে পড়া যেত না। এবার সেটাও সম্ভব হবে। আর সেজন্যই নিয়মে একগুচ্ছ বদল আনতে চলেছে ইুজিসি। একইভাবে স্নাতকোত্তর স্তরেও ভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার ইউজিসি-র তরফে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, শুধু বাংলা বা সমতুল বিষয় নয়, একই সঙ্গে টেকনিক্যাল কোর্সও করতে পারবেন কোনও পড়ুয়ারা।
সূত্রের খবর, উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত আইন ২০২৪-এর কথা উল্লেখ করে ইতিমধ্যে নয়া কোর্স সংক্রান্ত খসড়া তৈরি করেছে ইউজিসি। সেখানে বলা হয়েছে, পড়ুয়ারা স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে দু’টি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে পারবেন।
তবে ইউজিসির খসড়ার মাধ্যমে আদৌ শিক্ষার্থীদের কোনও সুবিধা হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তবে এর মাধ্যমে উচ্চশিক্ষাকে আরও ব্যয়বহুল করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। তাঁর মতে, এর মাধ্যমে সাধারণ পড়ুয়াদের জন্য উচ্চশিক্ষার পথকে দুর্গম করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই খসড়া প্রসঙ্গে সমাজমাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘দেখে মনে হল এর সাধ অনেক, কিন্তু সাধ্যের বিষয়ে সে নিশ্চুপ। বিদেশের অনুকরণ করে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার খোলনলচে বদল হবে, কিন্তু অর্থ আসবে কোথা থেকে? আসলে চুপিচুপি পেছনের দরজা দিয়ে উচ্চশিক্ষাকে ব্যয়বহুল এবং বেসরকারি ক্ষেত্রের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে যাতে সাধারণ বাড়ির ছেলেমেয়েদের সাধ্যের বাইরে চলে যায়।’’
ইউজিসির যুক্তি, বর্তমানে উচ্চশিক্ষার আঙ্গিক ব্যাপক ভাবে পাল্টে যাচ্ছে। শিক্ষার মানোন্নয়ন ঘটছে ক্রমশ। উচ্চশিক্ষায় একের বেশি বিষয় নিয়ে পড়াশোনার আগ্রহ দেখা যাচ্ছে পড়ুয়াদের মধ্যে। স্নাতক স্তরের পড়াশোনার মেয়াদ ৩ থেকে ৪ বছর। অন্য দিকে, স্নাতকোত্তরের মেয়াদ ১ থেকে ২ বছর হবে। বিষয়ের উপর ভিত্তি করে কোর্সের মেয়াদ বাড়তে বা কমতে পারে। খুব শীঘ্রই তাদের তরফে খসড়া প্রস্তাবগুলি কেন্দ্রের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।