পুবের কলম প্রতিবেদক: বেশ কিছুদিন থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে পক্ষীকুল। বিমানে পাখির ধাক্কার ঘটনা বেড়েই চলেছে। স্বাভাবিকভাবেই দুর্ঘটনা হতে পারে এমন আশঙ্কায় যথেষ্ট উদ্বিগ্ন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এই অবস্থায় বিমানবন্দরের আশেপাশের এলাকাকে আবর্জনা মুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলিকে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে আর্জি জানাল এয়ারফিল্ড এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটি বা এইএমসি। শনিবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে পুরসভাগুলিতে এবিষয়ে গুরুত্ব দিতে বলেছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, নন্দিনী চক্রবর্তী নিজেও এইএমসির চেয়ারপার্সন।শনিবারের বৈঠক ডেকেছিলেন কলকাতা বিমানবন্দরের ডিরেক্টর ড. প্রভাত রঞ্জন বেউরিয়া। তিনি জানান, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত কলকাতা বিমানবন্দরে পাখির ধাক্কার ঘটনা ঘটেছে ১৮টি। এটি বেশ উদ্বেগজনক। বিমানবন্দরের আশেপাশে মূলত দমদম, উত্তর দমদম, নিউ ব্যারাকপুর, বিধাননগর ও মধ্যমগ্রাম মিলিয়ে পাঁচটি পুরসভা রয়েছে। সেই সমস্ত পুরসভাগুলিকে এর জন্য নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কার করতে বলা হয়েছে। তিনি জানান, ময়লা-আবর্জনা, খোলা ড্রেন, মাংসের দোকান, মাছের স্টল ইত্যাদির ফেলে দেওয়া অংশ বা বর্জ্য পাখিদের আকর্ষণের প্রধান উৎস। চেয়ারপার্সন পরামর্শ দিয়েছেন, এবিষয়ে পুরসভাকে তৎপর হতে হবে এবং বিমানবন্দরের কাছাকাছি বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে বলা হয়েছে।
বৈঠকে বিমানবন্দর সম্পর্কিত পরিবেশগত বিষয়গুলির উপর আলোচনা করা হয়। বিমানবন্দরের আশেপাশের এলাকার আবর্জনা সরিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, ড্রেন পরিষ্কার করা, পাখিদের আনাগোনা কমানোর জন্য গাছ ছাঁটাই করার উপরেও আলোচনা হয়েছে। তবে আবর্জনা পরিষ্কার নিয়ে মধ্যমগ্রাম পুরসভার তৎপরতার প্রশংসা করেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব। বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকা পরিষ্কার থাকার ফলে পাখির সংখ্যা কমেছে, তাই বাকি পুরসভাগুলিকেও মধ্যমগ্রাম মডেল মানার কথা বলা হয়েছে। বৈঠকে লেজার লাইটের বিষয়টিও উঠে আসে। জানা গিয়েছে, এই ধরনের লাইট ব্যবহারের ক্ষেত্রে পুলিশ পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেবে।তথ্য বলছে, ২০১৫ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত বিমানবন্দরে ৪৫০ টিরও বেশি পাখির ধাক্কার ঘটনা ঘটেছে। বড় দুর্ঘটনা কমাতে আগাম পদক্ষেপ করতে চাইছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।