বেঙ্গালুরু, ২৮ অক্টোবর: আট কোটি টাকার জন্য স্বামীকে খুন! দেহ পোঁতা হল ৮০০ কিলোমিটার দূরে।
হাড়হিম করা ঘটনাটি কর্নাটকে। গত ৮ অক্টোবর রাজ্যের কোডাগু জেলায় এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির পোড়া দেহ ঘিরে ভয়ঙ্কর চক্রান্ত করে খুনের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। কোডাগু জেলার সুনীকোপ্পার কাছে একটি কফি প্ল্যান্টেশনের কাছে দেহ উদ্ধার হয়। দেহ এতটাই বিকৃত ছিল যে শনাক্তকরণ করতে সমস্যা দেখা দেয়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
ফুটেজে একটি লাল রংয়ের মার্সিডিজ বেঞ্জকে সেখান দিয়ে যেতে যায়। গাড়িটি রমেশ নামে এক ব্যক্তির নামে রেজিস্টার করা হয়েছে, যার স্ত্রী-স্বামীর নামে একটি নিখোঁজ ডাইরি করেছেন।
গাড়িটি তেলেঙ্গানায় রেজিস্টার করা হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ৫৪ বছর বয়সী ব্যবসায়ী রমেশ কয়েক সপ্তাহ আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে রমেশের স্ত্রী নীহারিকা ও তার প্রেমিক নিখিল সহ অঙ্কুর নামে অপর এক ব্যক্তি মিলে এক ঘৃণ্য চক্রান্ত করে খুনের করেছে।
রমেশকে খুন করে রাজ্যের বাইরে তার দেহ পুঁতে দেওয়া হয়। ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২৯ বছরের নীহারিকাকে সন্দেহের তালিকায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদের পরে সে নিখিল ও অঙ্কুরের সঙ্গে মিলে এই খুনের কথা জানায়। নিখিল একজন পশু চিকিৎসক।
পুলিশ সূত্রে খবর শৈশব ভালো কাটেনি নীহারিকার। তার যখন ১৬ বছর বয়স তখন তার বাবা মারা যান, তার মা আবার বিয়ে করেন।
নীহারিকা মেধাবী ছাত্রী ছিল, ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পরেই চাকরি শুরু করে। খুব ছোট বয়সে তার বিয়ে হয়, সন্তানের মা হন। অশান্তির কারণে বিয়ে টেকেনি তার।
তেলেঙ্গানার বাসিন্দা হলেও পরে বিবাহ সূত্রে নীহারিকা হরিয়ানায় থাকতে শুরু করে। পরে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে জেল হয় তার। সেখানেই তার অঙ্কুরের সঙ্গে পরিচয় হয়। জেল থেকে বেরিয়ে নীহারিকা ব্যবসায়ী রমেশকে বিয়ে করে। এটা ছিল নীহারিকার দ্বিতীয় বিবাহ।
এক বিলাসবহুল জীবনযাত্রায় অভ্যস্থ হয়ে পড়ে নীহারিকা। বাড়তে থাকে টাকার লোভ।
স্বামী রমেশের কাছ থেকে সে ৮ কোটি টাকার দাবি করে। রমেশ প্রত্যাখ্যান করতেই বিরক্ত হয়ে যায় নীহারিকা। টাকা হাতানোর জন্য প্রেমিক নিখিল ও অঙ্কুরের সঙ্গে মিলে রমেশকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
গত ১ অক্টোবরে দুজনের সাহায্যে হায়দরাবাদের উপ্পলে রমেশকে শ্বাসরোধ করে খুন করে নীহারিকা।
Read more: চার বছরের অপেক্ষা শেষ, ২০২৫ সাল থেকে শুরু হবে জনগণনা, চলবে ২০২৬ পর্যন্ত
পরে দেহ কম্বলে মুড়ে জ্বালিয়ে দিয়ে কফি এস্টেটের সামনে পুঁতে দেয়। কাজ শেষে তিনজনই হায়দরাবাদে ফিরে আসে। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে নীহারিকা স্বামী রমেশের নামে নিখোঁজের ডাইরি করে।
