ইনামুল হক, বসিরহাট: তালা পড়লো বিজেপির কার্যালয়ে। শাসক দল বা বিজেপির কোন বিরোধী দল নয়, বিজেপির হাড়োয়া মন্ডল কার্যালয় তালা মারলো খোদ দলেরই কর্মী সমর্থকরা। এই আবহেই বুধবার হাড়োয়া বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী বিমল দাস নমিনেশন পত্র জমা দিলেন বসিরহাট মহকুমা শাসকের দপ্তরে।সঙ্গে ছিলেন রাজ্য বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা সহ বসিরহাট বিজেপির সাংগঠনিক জেলার একাধিক নেতৃত্ব।
এদিকে প্রার্থী ঘোষণা হতেই হাড়োয়ায় বিজেপির একাধিক পার্টি অফিসে পড়ল তালা। কর্মীরাও উধাও। গোষ্ঠী কোন্দল এভাবেই আলগা হয়ে পড়ায় হাড়োয়া উপনির্বাচনে এক প্রকার মুখ থুবড়ে পড়ল বিজেপি। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এর ফলে তৃণমূল বাড়তি সুবিধা পেল তৃণমূল কংগ্রেস। এমনটাই দাবি তৃণমূল ব্লক সভাপতির। এই ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। ঘটনায় বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
হাড়োয়ার উপ-নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী বিমল দাস হাড়োয়া মন্ডলের বিজেপির সভাপতি ছিলেন। তাকেই প্রার্থী করতেই হাড়োয়া বিধানসভার গোপালপুর, হাড়োয়া ও দেগঙ্গাতে বিজেপির একাধিক কার্যালয়ে তালা মেরে উধাও হয়ে গেল বিজেপি কর্মীরা। এ প্রসঙ্গে বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার মহিলা মোর্চার সদস্য অঞ্জলি মজুমদার বলেন, হাড়োয়া বিধানসভার একাধিক বিজেপির পার্টি অফিসে তালা পড়েছে। এর কারণ ভারতীয় জনতা পার্টি যাকে প্রার্থী করেছে তার কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই। তিনি নিজের বুথ থেকে জয়লাভ করতে পারেন না। সাংগঠনিক দক্ষতা নেই।
জেলার সভাপতি তাপস ঘোষ টাকার বিনিময়ে তাকে প্রার্থী করেছেন। ভোট এলে বিজেপির নেতৃত্বরা টাকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলেন। নিজেরা ব্যাংক ব্যালেন্স তৈরি করেন। যারা বুথ স্তরে গ্রাম পঞ্চায়েতের স্তরে রাজনীতি করে তাদের কোন মতামত না নিয়ে টাকার বিনিময়ে প্রার্থী করা হয়েছে। তাই দলের অধিকাংশ কার্যকর্তারা তাকে মেনে নিতে পারেনি। বিজেপির পার্টি অফিসে তালা মেরে বাড়িতে বসে আছেন। হাড়োয়া বিধানসভার দেগঙ্গা ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি অরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, হাড়োয়ায় বিজেপির কোন অস্তিত্ব নেই। যাকে প্রার্থী করা হয়েছে তার বাবা সমাজ বিরোধী। একাধিক অপরাধের আসামী। বিজেপি কর্মীরা তাকে মানতে পারেনি। এটা ওদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এর ফলে তৃণমূল বাড়তি সুবিধা পাবে বলে মনে করছি।
হাড়োয়ার বিজেপি প্রার্থী বিমল দাস জানিয়েছেন, যারা তার বিরুদ্ধে এই ধরনের অপপ্রচার করছে তারা তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে। দল তাদের চিহ্নিত করে বহিষ্কার করার ব্যবস্থা করছে।আর বিজেপির কোনো পার্টি অফিসে তালা পড়েনি। আমি আমার জয়ের বিষয়ে ১০০ শতাংশ আশাবাদী।
বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সভাপতি তাপস ঘোষ জানিয়েছেন, হাড়োয়া বিধানসভার কোথায় কোথায় দলীয় কার্যালয়ে তালা পড়েছে এটা আমার জানা নেই। যে বা যারা অভিযোগ করছেন তাদেরকে আমি চিনি না। আর টাকার বিনিময়ে প্রার্থী করার যেটা অভিযোগ উঠেছে সেটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে পাঁচ জনের নাম পাঠানো হয়েছিল। তার মধ্যে বিমল দাসকে প্রার্থী করা হয়েছে। যে সমস্ত অভিযোগ উঠেছে তা সম্পন্ন ভিত্তিহীন। পাশাপাশি এটা তিনি বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল বলতে নারাজ। বসিরহাট মহকুমা তৃণমূল কংগ্রেস আই এন টি টি ইউ সি সভাপতি কৌশিক দত্ত বলেন, বিজেপি ভোটের আগেই হেরে বসে আছে।
তাদের এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসছে। ওটা ওদের দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবু বলব হাড়োয়ায় বিজেপি ১%ও জেতার জায়গায় নেই । সব মিলিয়ে আসরে নামার আগেই হাড়োয়ায় বিজেপির রাজনৈতিক ছবি অনেকটাই ঘোলাটে হয়ে পড়েছে বলে মনে করছি ওয়াকিবহাল মহল।