পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ দশ দফা দাবিতে ধর্মতলা এবং শিলিগুড়িতে চলছে জুনিয়র ডাক্তারদের আমরণ অনশন। এই আবহে আজ(মঙ্গলবার) দুপুর ২টা থেকে সুপ্রিমকোর্টে হতে চলেছে আর জি কর মামলার ষষ্ঠ শুনানি। দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চে হবে এই শুনানি।
গত ৯ আগষ্ট আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে কর্মরত তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। ধর্ষণ ও খুন করে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিচারের দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করে জুনিয়র চিকিৎসকরা। দেশ জুড়ে উঠতে থাকে বিচারের দাবি। সেই পরিস্থিতিতে দেশের শীর্ষ আদালতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে শুনানি শুরু করে।
ঘটনার পর দু’মাসেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত। এখনও কাটেনি আর জি কর হত্যাকাণ্ডের জট। তাই আজকের শুনানির দিকে তাকিয়ে রয়েছে দেশ। <span;>এদিন ঠিক কোন কোন বিষয় উঠে আসতে পারে আরজি কর মামলার ষষ্ঠ শুনানিতে?
শেষ শুনানিতে তদন্ত কত দূর তা সিবিআইয়ের কাছে জানতে চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এদিনও তদন্ত কোন পর্যায়ে রয়েছে সেই বিষয়ে জানতে চাইতে পারে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম শুনানিতে সিবিআই ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ জমা দিতে পারে সিবিআই। এর আগে প্রতিবারই শুনানিতে জুনিয়র ডাক্তারেরা নিয়মমাফিক পরিষেবা দিচ্ছেন কি না সেই প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি। এদিন ফের সেই প্রসঙ্গ উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন করেছিল, জুনিয়র ডাক্তাররা সঠিকভাবে পরিষেবায় যুক্ত হয়েছেন কিনা। রাজ্য তরফে জানানো হয়, জুনিয়র ডাক্তারেরা শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবা দিচ্ছেন। বহির্বিভাগ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে পরিষেবা দিচ্ছেন না তারা। জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ জানান, জুনিয়র ডাক্তাররা প্রয়োজনীয় পরিষেবা দিচ্ছেন। সেই সময় পাল্টা প্রশ্ন তুলেছিল সুপ্রিম কোর্ট।
প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করে বলেছিলেন, শুধু প্রয়োজনীয় পরিষেবা কেন? তা হলে কি সকল চিকিৎসক সব ডিউটি করছেন না? জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী জানিয়েছিলেন জরুরি পরিষেবার মধ্যে ওপিডি ও আইপিডি— দুই’ই পড়ে। সব শুনে প্রধান বিচারপতির নির্দেশ ছিল, হাসপাতালের বহির্বিভাগ এবং অন্যান্য ক্ষেত্র-সহ সমস্ত প্রয়োজনীয় পরিষেবায় যুক্ত হতে হবে জুনিয়র ডাক্তারদের।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম নির্দেশের পরও বহু জুনিয়র ডাক্তাররা এখনও আন্দোলন-অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। নিজেদের দশ দফা দাবিতে অনড় তারা। ১১ দিন ধরে টানা অনশনের ফলে বেশ কয়েকজন জুনিয়র ডাক্তার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এদিকে হাসপাতালের নিরাপত্তার বিষয়টি এদিন সুপ্রিম শুনানিতে উঠে আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
গত শুনানিতে হাসপাতাল গুলিতে ডিউটি রুম এবং শৌচাগার নির্মাণ, সিসিটিভি ক্যামেরা, পর্যাপ্ত আলো ইত্যাদি বসানোর কাজ কত দূর, তা জানতে চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সরকারি হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা এবং পরিকাঠামো সংক্রান্ত কাজ শেষ করার জন্য ১৫ অক্টোবরের ডেডলাইনও বেঁধে দিয়েছিল হাইকোর্ট। হাসপাতালগুলিতে সিসি ক্যামেরা বসানো-সহ সমস্ত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল এই সময়ের মধ্যে। পাশাপাশি আর জি কর কাণ্ডের পর গড়া ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্সের কাজে কি অগ্রগতি হল সেই বিষয়ও উঠে আসতে পারে সুপ্রিম শুনানিতে।