পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: শুধু ‘বাবা’ না টার্গেট ছিল পুত্র জিশান সিদ্দিকীও। শনিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ছেলে জিশানের অফিসের বাইরে গুলিবিদ্ধ হন বাবা সিদ্দিকী। তাঁকে লক্ষ্য করে ৬টি গুলি চালানো হয়েছিল, ৪টি গুলিই তাঁর বুকে লাগে। একটি গুলি তাঁর দেহরক্ষীর গায়ে লাগে। এদিন বিধায়ক জিশান সিদ্দিকীর দফতরের বাইরে দাঁড়িয়ে দশেরা উপলক্ষে বাজি ফাটাচ্ছিলেন তিনি, তখনই তাঁকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীরা গুলি চালায়।
এরপর গুরুতর অবস্থায় তাঁকে লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনার পরের দিন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ভারতের কুখ্যাত লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং-সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি। তারপরেই ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে শুধু বাবা সিদ্দিকী না সঙ্গে ছেলে বিধায়ক জিসান সিদ্দিকীকেও হত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে আততায়ীরা শুধু বাবা’কে হত্যা করতে সফল হয়। জানা গেছে, ১২ অক্টোবর মুম্বইয়ের বান্দ্রা এলাকায় গুলি চালানোর সময় এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকীর সঙ্গে কেবল একজন কনস্টেবল ছিলেন। তাকে ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হত।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন কয়েক আগেই সিদ্দিকী পরিবারকে হুমকি দিয়েছিল অভিযুক্তরা । সোমবার অভিযুক্তেরা পুলিশি জেরায় জানায়, বাবা-ছেলে দু’জনকেই খুনের ‘নির্দেশ’ ছিল। সামনে যাকে পাবেন, তাঁকেই গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই মতো শনিবার রাতে বাবা সিদ্দিকীকে সামনে পেয়ে গুলি চালান আততায়ীরা। তবে হঠাৎ বিষ্ণোই গ্যাং-এর রোষানলে পড়ল কেন বাবা সিদ্দিকীর পরিবার? উঠছে প্রশ্ন। একাংশের মতে সলমনের খানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে এই ঘটনা। চলতি বছরে সালমানের বাড়ির বাইরে গুলি চলার পর বাবা সিদ্দিকী তাঁকে নিরাপত্তা দেবার ঘোষণা দেন। মনে করা হচ্ছে, এরপর থেকেই বিষ্ণোই গ্যাংয়ের হিটলিস্টে উঠে আসেন তিনি।
লরেন্স গ্যাংয়ের তরফে শুবু লঙ্কার ওরফে শুভম রামেশ্বর লঙ্কার-এর তরফে যে ফেসবুক পোস্ট করা হয়, তাতেও সালমানের কথা উঠে আসে। এই ব্যক্তিই খুনের দায় স্বীকার করে ও রবিবার জানায়, যে সালমানকে বাঁচাবে বা নিরাপত্তা দেবে, তারই পরিণতি এমন হবে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত তিনজন প্রতিদিন মুম্বাইয়ের কুরলা এলাকা থেকে বান্দ্রায় যেতেন। হত্যার আগে কুরলায় ভাড়া বাসায় অবস্থান নিয়েছিলেন তাঁরা। সেখান থেকে বান্দ্রায় যেতে বেশির ভাগ সময় অটোরিকশা ব্যবহার করতেন। এ ছাড়া বাবা সিদ্দিকী ও তাঁর ছেলের যাতায়াত আছে, এমন এলাকাগুলোয় নিয়মিত নজরদারি করতেন তাঁরা। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, খুনের জন্য তিনজনের প্রত্যেককে আগাম ৫০ হাজার টাকা করে সুপারি দেওয়া হয়েছিল।হত্যাকাণ্ডের ঠিক আগের দিন বাইরে থেকে আনা হয়েছিল বন্দুক ।