পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ দেশের মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে উদ্যোগী হল কেন্দ্র। শনিবার জাতীয় শিশু অধিকার কমিশনের (এনসিপিসিআর) চেয়ারম্যান প্রিয়াঙ্ক কানুনগোর স্বাক্ষরিত একটি সুপারিশপত্র সামনে এসেছে। রাজ্যের সব মুখ্যসচিবদের উদ্দেশ্যে লেখা সেই চিঠিতে কমিশন জানিয়েছে, মাদ্রাসা শিক্ষায় টাকা দেওয়া বন্ধ করুন। যেসব অমুসলিম ছাত্রছাত্রী মাদ্রাসায় পড়াশুনো করছে তাদের অবিলম্বে সাধারণ স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করা হোক। মূলধারার শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে মাদ্রাসা ছাত্রদের সরিয়ে রাখা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে কমিশনের এই সুপারিশে।
এনসিপিসিআর-এর চেয়ারম্যানের এমন সুপারিশে বিস্মিত সংশ্লিষ্ট মহল। তাঁদের মতে, সংবিধানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের শিক্ষা বিষয়ে অধিকারের যে বিশেষ অনুচ্ছেদ রয়েছে তার অধীনে শুধু মাদ্রাসাই নয়, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ এবং জৈন সম্প্রদায় পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও আছে। শিশু অধিকার কমিশন শুধু মাদ্রাসা শিক্ষা বন্ধের সুপারিশ করায় সরাসরি বিজেপির এজেন্ডা নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ উঠেছে।ঘটনাচক্রে বিজেপি জোট শাসিত ভোটমুখী রাজ্য মহারাষ্ট্র সরকার শুক্রবারই রাজ্যের মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন মাথা পিছু ১০ হাজার টাকা বাড়িয়েছে।
শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী দেশের ৬-১৪ বছরের সব শিশুর শিক্ষার অধিকার রয়েছে। তবে ২০১২ সালে কেন্দ্র সরকার ওই আইনে একটি সংশোধনী আনে। সেখানে ওই আইনের আওতা থেকে সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে বাইরে রাখা হয়। এরপর গত ৯ বছর পর ২০২১ সালে মাইরোরিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে কমিশন। সেই রিপোর্টে বলা হয়, যেসব শিশুরা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে তারা মূলস্রোতের বুনিয়াদি শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। তাদের পঠনপাঠানের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নেই, উপযুক্ত শিক্ষক নেই।
জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের ওই রিপোর্ট নিয়ে কমিশনের প্রধান প্রিয়াঙ্ক কানুনগো বলেন, দেশের ১.২৫ কোটি শিশু মূল ধারার শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। তাদের এমনভাবে পড়ানো হচ্ছে যে তারা যেন কিছু লোকের ঠিক করে দেওয়া রাস্তা অনুযায়ী পড়াশোনা করতে পারে। দেশের ৭-৮ রাজ্যে মাদ্রাস বোর্ড রয়েছে। ওইসব বোর্ড বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে। ওইসব বোর্ডের জন্য আর্থিক অনুদান বন্ধ করে দেওয়া উচিত এবং বোর্ডগুলি ভেঙে দেওয়া উচিত। যেসব হিন্দু পড়ুয়া ওইসব মাদ্রাসায় পড়ে তাদের মূল ধারার স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া উচিত।