রমিত বন্দ্যোপাধ্যায় : কলকাতার বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে দিশা আই হাসপাতালের পরিচালনায় আয়োজিত হল সপ্তম দিশা সম্মান ২০২৪-এর। দৃষ্টিহীনতা কোনও বাধা নয় এটা বারবার প্রমাণ করেছেন বহু সৃষ্টিশীল মানুষ। তবে এই বছর দিশা আই হাসপাতাল যাদের সম্বর্ধিত করল তারা সমাজের বৃহত্তর উদ্দেশ্যে বেশ কিছু কাজ করে চলেছেন।
এই অনুষ্ঠানে অকুল বিশ্বাস এবং অনিল দাস নামক ২ জন দৃষ্টিহীন ব্যক্তিকে এবং সারা বাংলা দাবা সংস্থা নামক একটি সংস্থাকে সম্বর্ধিত করা হয়। দিশা আই হাসপাতাল সকলকে ফলক সহ এক লক্ষ টাকার চেক দেয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দিশা আই হাসপাতালের চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা. দেবাশিস ভট্টাচার্য, জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর ড.ধৃতি ব্যানার্জি, নৃত্যশিল্পী তনুশ্রী শঙ্কর, ডা. তুষার কান্তি হাজরা, ডা. সমীর কুমার বসাক, ডা. তুষার সিনহাসহ বিশিষ্টরা।
সুন্দরবন ঝাড়খালির বাসিন্দা এবং ঝড়খালি সবুজ বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা হলেন অকুল বিশ্বাস। নিজে দৃষ্টিহীন হয়েও সুন্দরবনের পরিবেশ বাঁচানোর পথ দেখিয়ে চলেছেন এই অকুল বিশ্বাস। তিনি সুন্দরবনের নদীতীরে ম্যানগ্রোভ দেওয়াল তৈরি করার স্বপ্ন দেখছেন। তার সঙ্গে এই লড়াইয়ে যুক্ত হয়েছেন প্রায় ২০০ জন বাঘ-বিধবা (বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হয় যে সব পুরুষের তাঁদের স্ত্রীরাই পরিচিত হন ব্যাঘ্র-বিধবা বা বাঘ-বিধবা নামে)।
অনিল বিশ্বাস জন্মান্ধ হয়েও হুগলি জেলার পাণ্ডুয়া শহরে এক দৃষ্টিহীন শিল্পী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার হাতে তৈরি ছোট পালঙ্ক, দরজা, জানালা, চৌকি দেখে বেশ খানিকটা অবাক হতে হয়। এলাকার মানুষজনের কাছে তিনি দৃষ্টিহীন বিশ্বকর্মা নামে পরিচিত হয়েছেন।
এ ছাড়া দাবাড়ু দীপেন্দু বড়ুয়া পরিচালিত “সারা বাংলা দাবা সংস্থা” দৃষ্টিহীন মানুষদের জন্য দাবা প্রশিক্ষণ এবং প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। তার জন্য সম্বর্ধিত হয় এই সংস্থা।
ডা. দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, আমরা প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে সকল দৃষ্টিহীন মানুষ সমাজকে পথ দেখিয়ে চলেছেন তাদের সম্বর্ধিত করেছি।
প্রসঙ্গত, এই অনুষ্ঠানে জানানো হয় খুব শীঘ্রই দিশা মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের উদ্বোধন করা হবে। প্রায় ৬০০ বেড থাকবে এই হাসপাতালে। চোখের চিকিৎসার পাশাপাশি আরও অন্যান্য বিষয়ে স্বল্প মূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার উদ্দেশ্যে পথ চলা শুরু হবে এই হাসপাতালের বলে জানান কর্তৃপক্ষ।