কলকাতাMonday, 28 June 2021
  1. আজকের শিরোনাম
  2. ইতিহাস-ঐতিহ্য
  3. ক্রাইম
  4. খেলা
  5. জেলা
  6. দেশ
  7. ধর্ম ও দর্শন
  8. পর্যটন
  9. ফোটো গ্যালারি
  10. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  11. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  12. বিনোদন
  13. বিশ্ব-জাহান
  14. ব্লগ
  15. ভ্রমণ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

‘রাজ্যপাল দুর্নীতিগ্রস্থ, ওঁকে নিয়ে সবার আগে তদন্ত হওয়া উচিৎ’, বিস্ফোরক মমতা

mtik
June 28, 2021 7:34 pm
Link Copied!

পুবের কলম প্রতিবেদক: রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্ক কারুর অজানায় নয়। সুযোগ পেলেই রাজ্য সরকারের খুঁত ধরত তৎপর থাকে থাকেন রাজ্যপাল জগদীপ ধরকর। এমনকী রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির প্রতিও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তিনি। এবার সেই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এতদিন সব সময় যে কোনও কারণেই রাজ্যে প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে তাকে বলতে শোনা গেছে, তিনি অপমানিত। আজ যে রাজ্যপাল অপমানিতই শুধু নয়, সে কথা প্রায় লম্বা বক্তৃতায় বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।  

এককথায়, রাজ্যের নব্য ছোটলাট অর্থা‍ৎ রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের ‘সততার’ মুখোশ ফের টেনে খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে সরাসরি রাজ্যপালকে ‘দুর্নীতিগ্রস্থ’ বলে আক্রমণ করে তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘উনি একজন দুর্নীতিগ্রস্থ মানুষ। ওঁকে নিয়ে সবার আগে তদন্ত হওয়া উচিত। ওঁর নাম জৈন হাওয়ালা কেসের চার্জশিটে ছিল। এখনও এ সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলা রয়েছে। এমন একজন দুর্নীতিগ্রস্থকে কীভাবে কেন্দ্র রাজ্যপালের মতো সাংবিধানিক পদে নিয়োগ করল, তা বুঝতে পারছি না।’

পাশাপাশি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের বিরুদ্ধে উত্তরবঙ্গ ভাগের ষড়যন্ত্রে ইন্ধন জোগানোরও অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। 

মুখ্যমন্ত্রীর বিস্ফোরক অভিযোগের পরেই রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। রাজ্যের কোনও সাংবিধানিক প্রধানের বিরুদ্ধে অতীতে এমন বিস্ফোরক অভিযোগ ওঠেনি। যে হাওয়ালা কেসের কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা ১৯৯৬ সালের। সে সময়ে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ছিল নরসিমা রাও সরকার। ওই সময়েই হাওয়ালা কারবারের কথা প্রকাশ্যে আসে। অন্তত ১১৫ জন রাজনীতিকের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। নরসিমা রাও মন্ত্রিসভার তিন মন্ত্রীর নামও জড়িয়ে যায়। উঠে আসে জগদীপ ধনকরের নামও। ঘটনার সময়ে জনতা দলের সাংসদ ছিলেন বাংলার বর্তমান রাজ্যপাল।

গত কয়েকদিন ধরে উত্তরবঙ্গ সফর শেষে কলকাতায় ফেরার আগে দার্জিলিংয়ের জিটিএ’কে ‘দুর্নীতির আখড়া’ বলে আখ্যা দিয়ে কম্প্রোটলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) দিয়ে তদন্ত করানোর হুঙ্কার ছেড়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। এদিন নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন এক সাংবাদিক। জবাবে পাল্টা রাজ্যপালের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘উনি নিজেই তো দুর্নীতিগ্রস্থ। হাওয়ালা জৈন কাণ্ডের চার্জশিটে কার নাম উল্লেখ ছিল? তারপর কীভাবে পার পেয়েছেন? অনেকভাবে কোর্টকে ম্যানেজ করা হয়েছে। এখনও একটি মামলা বাকি রয়েছে। জিটিএ-র দুর্নীতির কথা বলার আগে উনি কাদের নিয়ে, কত খরচ করে দার্জিলিং গেলেন, রাজভবনে কত খরচ হল, সেসব নিয়ে তদন্ত হোক।’ সিএজি’কে দিয়ে জিটিএ’র অডিটের বিরোধিতা করে মুখ্যমন্ত্রী সাফ বলেন, ‘রাজ্য সরকার নিজেই তার অডিট করছে, সিএজি অডিটের কোনও প্রয়োজন নেই।’

রাজ্যপাল যে বাংলায় তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে মদত দিচ্ছেন, সেই অভিযোগ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কেন তিনি হঠাৎ করে উত্তরবঙ্গ সফরটা বেছে নিলেন? উত্তরবঙ্গকে ভিন্নভিন্ন ছিন্নছিন্ন করার খেলায় মত্ত হতে? উনি গিয়ে শুধু বিজেপির এমপি-এমএলএ’দের সঙ্গে দেখা করেছেন। বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আমি এটাও জানি, আমাকে কেউ কেউ বলেছে, তাদের বলা হয়েছে, আন্দোলন গড়ে তোলো। এটা রাজ্যপালের কাজ নয়। তাছাড়া রাজ্যপাল এতজন মানুষকে কেন সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। এটা কি বিপর্যয় মোকাবিলা আইন লঙ্ঘন নয় ?’ এদিন ফের রাজ্যপালকে অপসারণের দাবি তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এরকম রাজ্যপাল আগে কখনও দেখিনি। ওনার যা ইচ্ছে উনি তাই করবেন, যা ইচ্ছে তাই বলবেন, এটা আমি মেনে নেব না। প্রত্যেককে ডিক্টেট করে বলে দিচ্ছে এটা করতে হবে! একটা অফিসারকে বলে দিচ্ছে, ক্ল্যারিফাই কর। একটা অফিসারকে ফোন করে থ্রেট করছে। বলছেন, ইউ আর আন্ডার স্ক্যানার। উনি কে? তবুও যতদিন থাকবেন, ফোন করলে কথা বলব, দেখা করতে চাইলে দেখা করব। এটা আমার সৌজন্যবোধ। ওঁকে যাতে সরিয়ে নেওয়া হয় তার জন্য আগে আমি তিনটে চিঠি লিখেছি। এটা কেন্দ্রীয় সরকারের এবার ভেবে দেখা উচিত।’

ভোটের ফল প্রকাশের পরে ভোট হিংসার তদন্তের অছিলায় একের পর এক কেন্দ্রীয় সংস্থার রাজ্যে আসা নিয়েও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শ্লেষাত্মক কণ্ঠে বলেন, ‘ভোটে হারার পর মানুষের রায়কে মেনে নেওয়া উচিত ছিল। সেটা না করে ওরা রোজ সিবিআই পাঠাচ্ছে, মানবাধিকার কমিশন পাঠাচ্ছে, ইডি পাঠাচ্ছে।’