পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: যোগী শাসনামলে উত্তরপ্রদেশে জঙ্গলরাজ কায়েম হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ যে মিথ্যা নয় বারেবারেই তার প্রমাণও মিলেছে। দলিত নির্যাতন এবং খুনের ঘটনা যেন ছায়াসঙ্গী হয়ে উঠছে বিজেপি শাসিত লখনউতে। স্পষ্টতই গেরুয়া প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে এই ধরনের পাশবিক ঘটনা।
ফের পুলিশি হেফাজতে দলিত যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় তুলকালাম রাজ্যের রাজধানীতে। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে, কনস্টেবল শৈলেন্দ্র সিং সহ আরও তিনজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ, মৃতের নামে মিথ্যা মামলা চাপিয়ে, জেলের মধ্যে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে।
মৃত যুবকের নাম আমান গৌতম। বয়স ২৪। পরিবারের দাবি, নীচু জাতের হওয়ায় কারসাজি করে জেলের মধ্যে খুন করা হয়। শুক্রবার রাতে খুন হয় আমান। যদিও পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। গৌতমের স্ত্রী রোশনির অভিযোগ, শুক্রবার রাতে স্বামী বিকাশ নগরের আম্বেদকর পার্কে বসে ছিলেন। হঠাৎ কিছু সংখ্যক পুলিশ সেখানে আসে। আর গৌতমকে মারধর ও গালিগালাজ শুরু করে। তারপর জেলে পুরে দেয়।
জেলের অন্দরে অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে খুন করা হয় তার স্বামীকে। যদিও পুলিশের দাবি, জুয়ার ঠেকে হানা দিতে গিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছিল মৃত যুবককে। জেলে নিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। তারপর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টেও শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
মৃত্যুর কারণ হিসেবে হার্ট অ্যাটাক (কার্ডিওজেনিক শক) দেখানো হয়েছে। যদিও রিপোর্ট ভুয়ো বলে তোপ দাগেন আমানের স্ত্রী রোশনি। পুরো ঘটনায় নির্যাতিতর বাড়ি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন আজাদ সমাজ পার্টির সাংসদ চন্দ্রশেখর আজাদ এবং সমাজবাদী পার্টির সাংসদ আর কে চৌধুরী। নিহতদের আত্মীয়দের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি সহ দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার, বসপা সুপ্রিমো মায়াবতী আমানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন এবং দোষী পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। বলা বাহুল্য, মোদির শাসনামলে দেশের আইনি ব্যবস্থায় ব্যাপক বদল আনা হয়েছে। ইন্ডিয়ান পেনাল কোড বদলে হয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা। পাশাপাশি ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট হয়েছে ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম আর ক্রিমিনাল প্রোসিডিওর কোড বদলে হয়েছে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা । নয়া এই আইন পুলিশের হাতে অনেক ক্ষমতা তুলে দিয়েছে সরকার। আর অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ নিজের ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করছে বলেও অভিযোগ আনছেন অনেকে। লখনউের ঘটনা পুলিশের ক্ষমতার অপপ্রয়োগ বলে মনে করছেন একাংশ।