নিউইয়র্ক: গাজায় ১ বছরের বেশি সময় ধরে ইসরাইলি নির্মমতার বিরুদ্ধে বিশ্ব বিবেক যেখানে প্রতিবাদে মুখর, ঠিক সে সময় যুদ্ধবিরতির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ওয়াশিংটন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগ দিয়েছে আরো ৮ দেশ। যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের বিপক্ষে দাঁড়ানো দেশগুলোর মধ্য রয়েছে- ইসরাইল, আর্জেন্টিনা, হাঙ্গেরি, প্যারাগুয়ে, টোঙ্গা, পাপুয়া নিউ গিনি, নাউরু এবং চেক প্রজাতন্ত্র। বিপরীতে ১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদে এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে ১৫৮টি দেশ। আর ভোটদানে বিরত ছিল ১২ দেশ। পাস হওয়া প্রস্তাবে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা আন্দোলন হামাসের মধ্যে অবিলম্বে শর্তহীন ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে গাজায় ইসরাইলি জিম্মিদের তাৎক্ষণিক মুক্তির দাবিও করা হয়েছে।
Read More: সার্ককে সক্রিয় করতে আহ্বান ইউনূসের
রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবগুলো মানতে আইনি বাধ্যবাধকতা না থাকলেও এর রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। এসব প্রস্তাবে বিভিন্ন দেশের বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়। এদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের চলমান হামলায় কমপক্ষে আরও ১৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া ইসরাইলি বোমায় আহত হয়েছেন ৬৯ জন। এ নিয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় মৃতের মোট সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৮০৫ জনে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনীর নিরলস হামলায় এ পর্যন্ত এক লাখ ৬ হাজার ২৫৭ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
Read More: কানাডায় বাড়ছে স্বেচ্ছামৃত্যুর সংখ্যা
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তার চালান নিয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনি নিরাপত্তারক্ষীদের ওপর ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ১২ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আলজাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গাজার স্থানীয় ফিলিস্তিনি মিডিয়ার শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি মর্গে মৃতদেহ স্তূপ করে রাখা হয়েছে, মৃতদেহগুলো খান ইউনিসের পশ্চিমে লক্ষ্যবস্তু করা ওই ত্রাণবাহী পরিবহনের নিরাপত্তাকর্মীদের বলে জানা গেছে।
চিকিৎসক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত ছিটমহলের দক্ষিণ অংশে ত্রাণবাহী ট্রাক সুরক্ষিত করার জন্য নিযুক্ত বেসামরিক রক্ষীদের লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী, বৃহস্পতিবার ওই ইসরাইলি হামলার পর কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় খাদ্য ও অন্যান্য সরবরাহের নিরাপদ প্রবেশে সহায়তা করা নিরাপত্তা রক্ষীদের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর এটি সর্বশেষ হামলা। এদিকে গাজা খাদ্য সংকটে ভুগছে এবং দুর্ভিক্ষের আশঙ্কায় জর্জরিত। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। ইসরাইলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।