পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি ফিলিস্তিনের ওপর ইজরায়েলি বিমান হামলার প্রতিবাদ করায় ফিলিস্তিনিদের বেশ কিছু ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পোস্ট থেকে সরিয়ে ফেলে ফেসবুক। এতে ক্ষিপ্ত ক্ষোভ জানান প্রতিবাদবাদকারীরা। গুগল প্লে স্টোর ও অ্যাপলের অ্যাপস্টোরে ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর পর্যালোচনা মান বা রিভিউ কমিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান ফিলিস্তিনের সমর্থকরা। ফলে অ্যাপস্টোর ও গুগল প্লে স্টোরে এর রেটিংস অনেকটাই কমে এসেছে। অ্যাপস্টোরে ফেসবুক অ্যাপের রিভিউ ৫ এর মধ্যে যেখানে ৪ ছিল, তা নেমে ২.৩ এ দাঁড়িয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ফিলিস্তিন ও ফিলিস্তিন সমর্থকদের হাজার হাজার এক তারকা রিভিউ দেওয়ার জন্যই এটা হয়েছে। এছাড়া বেশির ভাগ রিভিউয়ের সাথেই ফিলিস্তিনকে সমর্থক করে ফেসবুকের বিরুদ্ধে নানা মন্তব্যও করেছেন ব্যবহারকারীরা। এমনকি হ্যাশট্যাগ দিয়েও মন্তব্য করেছেন তারা।
এ বিষয়ে ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ বার্তা বিভাগের এক জ্যেষ্ঠ সফটওয়্যার প্রকৌশলী লিখেছেন, ‘ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ঘটনায় ফেসবুকের ওপর থেকে বিশ্বাস পড়ে যাচ্ছে ব্যবহারকারীদের। তাদের পোস্ট আটকে দেওয়া কিংবা কম মানুষের কাছে পৌঁছনো বা পোস্ট মুছে দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন তারা। তাই আমাদের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তারা।’
এবার ফেসবুক কর্মীরা ফিলিস্তিনের পোস্টের কিছু অংশ পরিবর্তনের দাবি করেছে। ফিনান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, পোস্টের ব্যাপারে সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখতে প্রায় ২০০ জন ফেসবুক কর্মচারী তাদের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি সংস্থাটির কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়েছে। সেই চিঠিতে আভ্যন্তরীণ টাস্ক ফোর্স গঠন করে তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার কমপক্ষে ১৪৮ জনের বেনামে স্বাক্ষর করা চিঠি অনুসারে কর্মচারী, প্রেস এবং কংগ্রেসের সদস্যরা তাদের ক্রমহ্রাসমান অ্যাপ স্টোরের রেটিংয়ের প্রতিফলন ঘটেছে বলে তুলে ধরা হয়েছে। চিঠিতে এও বলা হয়েছে, ব্যবহারকারীরা মনে করছেন, তাদের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনিদের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরা হচ্ছে না।
ফিনান্সিয়াল টাইমসের (এফটি) প্রথম প্রকাশিত এই চিঠিতে ফেসবুকের নেতৃত্বকে ফিলিস্তিনিপন্থী বিষয়বস্তু নিয়ে যাতে ভুল বোঝাবুঝি না হয়, তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
ফেসবুক কর্মচারীরা “আরব ও মুসলিম বিষয়বস্তু সম্পর্কিত পোস্ট নিয়ে তৃতীয় পক্ষের অডিটের দাবি করেছেন। কারণ সম্প্রতি, ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজমিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিককে ‘সন্ত্রাসবাদী’ উল্লেখ করে একটি পোস্ট করেন।
উল্লেখ্য, গত মাসে গাজায় সংঘাত চলাকালীন ফেসবুক ফিলিস্তিনি ব্যবহারকারীদের দ্বারা ব্যবহৃত ‘যেমন শহিদ’ এবং ‘প্রতিরোধ’ হিসাবে ব্যবহৃত শব্দগুলিকে সহিংসতার প্ররোচনা হিসাবে চিহ্নিত করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ভুলভাবে পবিত্র স্থানটিকে একটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে সংযুক্ত করার পরে এটি আল-আকসা মসজিদ সম্পর্কে পোস্টও সরিয়ে নিয়েছিল।