পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: বাল্যবিবাহ রোখার অজুহাতে এবার ঘুরপথে বিজেপি শাসিত অসমে লাগু হতে চলেছে ইউসিসি। যার মাধ্যমে মুসলিমদের বিবাহ ও বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে শরিয়াহ আইনের কার্যত অবসান ঘটতে চলেছে। সারা দেশ শরিয়াহ আইন মেনে ‘নিকাহ’ করতে পারলেও অসমে ক্ষেত্রে তা আর সম্ভব হবে না।
নিকাহ পড়ানো এবং খোৎবা পাঠ বিবাহের অপরিহার্য একটি বিধি। একজন কাজি বা মাওলানা সাধারণত বিয়ে পড়িয়ে থাকেন। এছাড়া আরবি ভাষায় দক্ষ এক ব্যক্তি’ও নিকাহ পাঠ করাতে পারেন। এটাই শরিয়াহ আইন। যা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। এবার মুসলিম ‘নিকাহ’ ব্যবস্থা’তেও পরিবর্তন আনতে চলেছে হিমন্ত সরকার। যার ফলে মুসলিমদের বিবাহ ও বিচ্ছেদে কাজিদের ভূমিকা বিলুপ্ত হবে। অর্থাৎ কাজি বা মাওলানা নয়, বিবাহের ক্ষেত্রে ‘অসম কমপালসরি রেজিস্ট্রেশন অব ম্যারেজ অ্যান্ড ডিভোর্স বিল’ এর মাধ্যমেই রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে মুসলিমদেরও। যা কার্যত শরিয়তি আইনের পরিপন্থী। বুধবার এই ঘোষণা দেন হিমন্ত সরকার। শুধু তাই নয়, এই মর্মে একটি আইনের খসড়াও তৈরি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। হিমন্ত শর্মা আরও জানান, আগামী বসন্ত অধিবেশনে এই বিল আনা হবে, যেখানে মুসলিমদের বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদের রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হবে।
শরিয়াহ আইনের বিলুপ্তির ‘অজুহাত’ হিসেবে তিনি জানান, ‘আমরা একটি বিল আনতে চলেছি যেখানে ১৮ অনুর্ধ্বরা বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না। সেক্ষেত্রে বাল্য বিবাহ রুখতে আমরা অনেকটা সফলকাম হব। অর্থাৎ মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন আর কাজিদের হাতে থাকছে না। রাজ্যের উপর এই দায়িত্ব স্থানান্তরিত হতে চলেছে।
যদিও অসমের একাধিক মুসলিম সংগঠন ‘কাজি প্রথা’ রাখার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। যা নিয়ে এদিন একটি শব্দ’ও অপচয় করেননি হিমন্ত শর্মা।
হিমন্ত বিশ্বশর্মা আরও বলেন, ‘বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষজনের বিয়ের রীতি নীতি আলাদা। এই নিয়ে আমাদের বিলে কোনও উল্লেখ নেই। শুধুমাত্র বিয়ের রেজিস্ট্রেশন সরকারি আধিকারিক করবেন। তা বাদ দিয়ে হিন্দু বা মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে কোনও পরিবর্তন আনা হচ্ছে না।’
ওয়াকিফহাল মহলের মতে, লাভ জিহাদ রুখতে হিমন্ত শর্মার এটা প্রাথমিক ধাপ। তবে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আগেই বলেছিলেন উত্তরপ্রদেশে আদলে রাজ্যে লাভ জিহাদ রুখতে কড়া আইন আনা হবে। তাতে লাভ জিহাদে দোষী প্রমাণিত হলে যাবজ্জীবন দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে একজন’কে।