পুবের কলম,
ওয়েবডেস্ক: ভয়াবহ বন্যার কবলে হুগলির খানাকূল, ঘাটাল, পাঁশকুড়া, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর। জলবন্দি
এলাকা। বিদ্যুৎ নেই খানাকুলে। বন্যা প্লাবিত এলাকাগুলিতে ত্রাণ দেওয়ার কাজ চলেছে।
দুর্গত এলাকার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
অস্থায়ী ত্রাণ শিবির করে সেখানে তাদের রাখা হয়েছে। এত দ্রুত বন্যার জল বাড়তে থাকায়
ক্রমশই আতঙ্ক বাড়ছে পাঁশকুড়ার বাসিন্দাদের। চারদিকে শুধু জল আর জল।
স্কুল-কলেজ-সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি সব জলবন্দি।
পাঁশকুড়া শহরের চাঁপাডালি, মধুসূদনবাড়, বাহারগ্রাম, সুড়ানানকার
প্রভৃতি এলাকার বাসিন্দারা অতীতে এরকম ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হননি। নদীবাঁধ ভাঙার
পর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এভাবে দুর্ভোগ ঘনিয়ে আসবে তাঁরা কল্পনাও করতে পারেননি।
বিদ্যুৎ না থাকায় বেড়েছে পানীয় জলের সমস্যা। এদিন সকালে ত্রিপলভর্তি একটি গাড়ি
বাহারগ্রামে আসে। মুহূর্তের মধ্যে তা বিলি হয়ে যায়। সেই ত্রিপল নিতেই মানুষ ভিড় করে। পাঁশকুড়ায়
যেন অলিখিত বনধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দোকান, ব্যাংক, অফিস সব প্রতিষ্ঠানই
কার্যত জলবন্দি। ১৬ নম্বর জাতীয়
সড়কে মঙ্গলদ্বারি থেকে ক্ষীরাই যাওয়ার রাস্তার দু’ধারে সারি সারি
ত্রিপল খাটিয়ে দুর্গতরা আশ্রয় নিয়েছেন। গবাদি পশু আর মানুষ তাঁবুর নীচে সহাবস্থান
করছেন। আবার, অনেকে বাড়ি ছেড়ে ত্রাণশিবিরে আসতে চাইছেন না।
জলমগ্ন বাড়ির
ফাঁকা ছাদে জিনিসপত্র তুলে সেখানেই আশ্রয় নিয়েছেন। আলু, পেঁয়াজ, মুড়ি
প্রভৃতি খাদ্যসামগ্রীর আকাল। বুধবার থেকেই পাঁশকুড়া সবজি বাজার বন্ধ। ফলে একদিকে যেমন সরবরাহ
নেই, আনাজপাতির দাম মহার্ঘ্য হয়ে উঠছে। বেলা যত
গড়িয়েছে জাতীয় সড়ক তত বেশি জলমগ্ন হয়েছে। এজন্য মুম্বই রোডে একাধিক জায়গায়
কলকাতামুখী একটি লেন বন্ধ করে দিতে হয়েছে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঁশকুড়া
ছাড়ার পর জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী এবং পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য দীর্ঘক্ষণ অন্যান্য অফিসারদের নিয়ে
মিটিং সারেন। কীভাবে ত্রাণসামগ্রী দুর্গত এলাকায় পৌঁছে দেওয়া যায় তা নিয়ে
পরিকল্পনা করেন। প্রশাসন সর্বতোভাবে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকালই,
জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি তুলে তাদের কাজে যোগদানের আহ্বান জানান।