আম্মান, ২১ সেপ্টেম্বর: বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে কুষ্ঠ রোগকে নির্মূল করেছে জর্ডান। এক ঘোষণায় এই তথ্য জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। হু যাচাই করে জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কোনও কুষ্ঠ রোগী শনাক্ত হয়নি। জর্ডানে নিযুক্ত হু প্রতিনিধি ড. জামিলা আল রাইবি বলেন, ‘এই সফলতা সম্ভব হয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নেতৃত্বের কারণে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জর্ডানের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যৌথ প্রচেষ্টায়।’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার পরিচালক সাইমা ওয়াজেদের কথায়, ‘এই প্রাচীন রোগটিকে নির্মূল করেছে জর্ডান যা জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত বচ্ছে। বিশ্ব থেকে কুষ্ঠ রোগ নির্মূল করার ক্ষেত্রেও এই সফলতা গুরুত্বপূর্ণ।’ আম্মান সরকারের প্রশংসা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ঘেব্রিয়াসুস বলেন, এটি জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে একটি চিত্তাকর্ষক মাইলফলক। তাঁর কথায়, ‘কুষ্ঠ রোগ বহুকাল ধরে মানবতাকে পীড়া দিয়েছে। কিন্তু দেশে দেশে আমরা এর সংক্রমণ বন্ধ করছি এবং পরিবার ও সম্প্রদায়কে এর যন্ত্রণা ও কলঙ্ক থেকে মুক্ত করছি।’ উল্লেখ্য, কুষ্ঠ বা হ্যানসেন রোগটি ম্যাইকো ব্যাকটেরিয়াম লেপরের কারণে ঘটে থাকে। এটি ত্বক ও স্নায়ুর একটি সংক্রমণ। এই ব্যাধি ত্বক, শ্লৈস্মিক ঝিল্লি, পেরিফেরাল স্নায়ু, চোখ ও শ্বাসযন্ত্রকে প্রভাবিত করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, কুষ্ঠ সম্ভবত শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে ও পোকামাকড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। আবার অনেকেই মনে করেন, এটি ছোঁয়াচে বলে একজনের থেকে অন্যজনে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগে আক্রান্ত হলে কেবল শারীরিক যন্ত্রণাই নয়, মানসিক ও সামাজিক নিগ্রহেরও শিকার হতে হয় রোগীকে। যদিও চিকিৎসকরা বলছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে কুষ্ঠ সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য একটি রোগ। কুষ্ঠ রোগের লক্ষণগুলি হল, চামড়ায় ফ্যাকাশে দাগ–ছোপ, ত্বকে ছোট ছোট ফোঁড়া, চামড়া শুষ্ক ও শক্ত হয়ে যাওয়া, পায়ের পাতার নিচের অংশে ঘা, মুখের বা কানের কিছু স্থানে ফুলে ওঠে, চোখের পাপড়ি ও ভ্রু পড়ে যাওয়া, সংক্রমিত স্থানে অসাঢ়তা ও পঙ্গু হয়ে যাওয়া। কিন্তু কুষ্ঠরোগ হওয়ার কারণ কী? আসলে কুষ্ঠরোগ যে ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়, সেটি আমাদের পরিবেশেই থাকে। জিনগত পরিবর্তন ও বৈচিত্র্য কুষ্ঠরোগের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়। সাধারণত নিঃশ্বাসের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করে কুষ্ঠ রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া।