রমিত বন্দ্যোপাধ্যায়: পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশন, পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগম এবং রাজ্য প্রতিবন্ধকতা কমিশনের উদ্যোগে টালিগঞ্জের পরিবহণ দফতরের ট্রেনিং স্কুলে হয়ে গেল ১০ দিনব্যাপী একটি কর্মশালা। ২ দফার এই কর্মশালার প্রথম ভাগটি ৯ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের সরকারি যাত্রী পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৫০০ জন কর্মীদের নিয়ে করা হয়। কীভাবে আরও উন্নত এবং মানবিকতার সঙ্গে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব সেই বিষয়ে বাস চালক, কনডাক্টর, বাস অপারেটরদের প্রশিক্ষণ দেন বিশেষভাবে সক্ষম মানুষেরা। প্রশিক্ষকদের মধ্যে কেউ কেউ দৃষ্টিহীন, আবার কেউ বা লোকোমোটিভ ডিসঅর্ডারের শিকার।
প্রশিক্ষকরা সকলেই তাদের নিজ নিজ কর্ম এবং সামাজিক জগতে সুপ্রতিষ্ঠিত। প্রশিক্ষকদের মধ্যে কেউ বা শিক্ষক, অধ্যাপক, সরকারি বা বেসরকারি কর্মচারি বা প্রাক্তন কর্মচারি। শিশু, নারী, প্রতিবন্ধী বা বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের আরও আন্তরিক এবং উন্নত পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে করা হয় এই কর্মশালা।
রামকৃষ্ণ মিশন ব্লাইন্ড বয়েজ অ্যাকাডেমির প্রাক্তন অধ্যক্ষ এবং এই কর্মশালার কো-অর্ডিনেটর বিশ্বজিৎ ঘোষ জানান, এই যাত্রী পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষরা হলেন সমাজের মেরুদন্ড। তারা প্রতিদিন সাধারণ জনগণকে সুষ্ঠু পরিষেবা দিয়ে থাকেন। এই ধরনের কর্মশালা এবং আলোচনা সভার যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা আছে। এই কর্মশালা যাত্রী পরিষেবা প্রদানকারীদের বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের ব্যাপারে অবগত করা হয়।
কর্মশালার এক প্রশিক্ষক রণবীর দত্ত জানান, আমরা যাত্রী পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কিছু মানুষের সমস্যার কথাও জানতে পারছি যা তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জানা দরকার তাতে পরিষেবার উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করবে।
এক সরকারি বাস কনডাক্টর জানান, অনেক সময়ে দৃষ্টিহীন মানুষ বা প্রবীণ নাগরিকদের বাসে তুলতে গিয়ে পুলিশি হেনস্থার মধ্যে পরে যাই, কারণ ব্যস্ততার মধ্যে এই ধরনের মানুষের বাসে উঠতে একটু বেশি সময় লাগে।
অধ্যাপিকা মৌশ্রী বৈশিষ্ট্য, অধ্যাপক চন্দ্রনাথ সাহা, স্কুল শিক্ষক বিমল জ্যোতি পুরকায়স্থ , অধ্যাপক দেবকুমার দণ্ডপাত , কুহু দাসগুপ্ত, দিলীপ বালা সহ অন্যান্য সুপ্রতিষ্ঠিত বিশেষভাবে সক্ষম মানুষেরা এই কর্মশালায় ক্লাস নেন এবং দ্বিতীয় দফায় নেবেন বলে জানা গিয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানান, দ্বিতীয় দফার কর্মশালার দিনক্ষণ পরে জানানো হবে।