পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: আরও বিপাকে শিল্পপতি অনিল আম্বানি। প্রতারণার অভিযোগে তাঁকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করল সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া বা সেবি। নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে তহবিল অপসারণের অভিযোগে অনিল অম্বানী-সহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করল বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি। শেয়ারবাজারে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি রিলায়েন্স হোম ফাইনান্সের প্রাক্তন কর্তা অনিল আম্বানিকে ২৫ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সেবির ২২২ পাতার নির্দেশে বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছর সেবি তালিকাভুক্ত কোনও কোম্পানির ডিরেক্টর বা পরিচালনা সংক্রান্ত অন্য কোনও পদে অনিল থাকতে পারবেন না। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই হু হু করে পড়ল রিলায়েন্সের একাধিক শেয়ারের দর। যা আগামী সপ্তাহে আরও কমবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। রিলায়েন্স পাওয়ার ৫ শতাংশ, রিলায়েন্স ইনফ্রা ১০.৪ শতাংশ এবং আরএইচএফএল ৪.৯০ শতাংশ কমেছে।
অনিলের সংস্থা ‘রিলায়্যান্স হোম ফাইনান্স’-এর বিরুদ্ধে নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে তহবিল অপসারণের প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছে সেবি।
তাদের ছ’মাসের জন্য শেয়ারবাজার থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি জরিমানা করা হয়েছে ছ’লক্ষ টাকা। অনিল এবং তাঁর সংস্থা ‘রিলায়্যান্স হোম ফাইনান্স’ এর কয়েক জন আধিকারিক মিলে সংস্থার তহবিলের একাংশ তাঁদের ব্যবসায়িক সহযোগী কোম্পানিগুলির ‘ঋণ’ হিসাবে ‘ছদ্মবেশে’ অপসারণের প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন বলে সেবির রিপোর্টে জানানো হয়েছে।
২০২২ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে অনিল-সহ তিনজনের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে রিলায়েন্স হোম ফাইনান্স সংস্থার তহবিল থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এরপরেই তাঁদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ওই সময়ই নির্দেশে সেবি জানিয়েছিল, তসিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়ার তালিকাভুক্ত কোনও পাবলিক কোম্পানির পদে থাকতে পারবেন না অনিল।
যতক্ষণ না পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে৷ তাঁকে ডিরেক্টর, প্রোমোটর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।দ কয়েক বছর আগে শেয়ার বাজারে বেআইনি সুবিধা নেওয়ার অভিযোগে রিলায়্যান্সের ব্যবসায়িক সহযোগী ফিউচার রিটেলের (এফআরএল) কর্তা কিশোর বিয়ানি, অনিল বিয়ানি এবং ফিউচার কর্পোরেট রিসোর্সেস (এফসিআরএল) এবং এফসিআরএল এমপ্লয়ি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টকে শেয়ার বাজারে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল সেবি।
একসময় বিশ্বের ষষ্ঠ ধনী অনিল আম্বানি নিজেকে দেউলিয়া বলে দাবি করেছেন। তাঁদের আরকম-এর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, রিলায়েন্স কমিউনিকেশন, রিলায়েন্স টেলিকম ও রিলায়েন্স ইনফ্রাটেলের ঋণ যথাক্রমে ৪৯ হাজার কোটি, ২৪ হাজার কোটি ও ১২ হাজার কোটি টাকা। এই বিপুল ঋণের ভারে জর্জরিত অনিল আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, এই মুহূর্তে তাঁর তেমন উল্লেখযোগ্য কোনও সম্পত্তি নেই। জীবনধারণের জন্যও তিনি স্ত্রী-সন্তানের উপর নির্ভরশীল।