পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ‘মা’
মানেই শান্তির পরশ। ‘মা’মানেই বিপদের বন্ধু। আর সেই ‘মা’ কেই খুন করেছিল এক
সন্তান। শুধু তাই নয় রান্না করেছিল মায়ের দেহাংশ। দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তির নাম সুনীল কুচকোরাভি। ২০১৭ সালে, ২৮ অগস্ট মুম্বইয়ের কোলাপুরে ঘটনাটি
ঘটেছিল । এদিন মাকে খুন করেও ক্ষান্ত হয়নি ছেলে।
জন্মদাত্রী’কে কুচি কুচি করে কেটে,
তাঁর শরীর থেকে মস্তিষ্ক, হার্ট, লিভার, কিডনি,
ব্রেন সব কিছু বের করে তাতে নুন, লঙ্কা গুঁড়ো, জিরে, হলুদ মিশিয়ে তরকারি রান্না
করে অভিযুক্ত।
মায়ের দেহাংশ রান্না করার পর আঙুল চেটে খেয়েও ছিল মাতৃহত্যাকারী নরখাদক। মা’কে
নৃশংসভাবে খুনের একটাই কারণ, উশৃঙ্খল
সন্তানকে মদ খাওয়ার টাকা দেন নি তিনি। হাড়হিম করার ঘটনায় ওই ব্যক্তিকে ২০২১ সালে মৃত্যুদণ্ড
দেয় কোলাপুর নিম্ন আদালত। সেই রায়ই এবার বহাল রাখল বম্বে হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি রেবতী মোহিতে দেরে
এবং বিচারপতি পৃথ্বীরাজ চহ্বানের বেঞ্চ মামলাটিকে বিরলের মধ্যে বিরলতম আখ্যা দিয়ে
অভিযুক্তর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে।
হাইকোর্ট তার পর্যবেক্ষণে জানায়, এমন ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
মঞ্জুর করাও বিপজ্জনক। এই ব্যক্তির জন্য
কারাবাসে দণ্ডিত অন্যান্যদের বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। শুয়োর এবং বিড়াল হত্যা
করে মাংস খাওয়ার অভ্যাস এই ব্যক্তির আগে থেকেই ছিল।
কিন্তু জন্মদাত্রীকে কুচি
কুচি করে কেটে যেভাবে সে ভক্ষণ করল তা অকল্পনীয়। এই অপরাধ নৃশংস, বর্বর এবং ভয়ঙ্কর। যুগের অন্যতম ঘৃণ্য অপরাধ। এই মামলা নিঃসন্দেহে বিরলের মধ্যে বিরলতম। এই
মানুষের সংস্কার সম্ভাবনা নেই।
উল্লেখ্য, কোলাপুর শহরে নিজের বাড়িতে ৬৩ বছরের মাকে নৃশংসভাবে খুন
করে সুনীল কুচকোরাভি। এর পর দেহ কুচি কুচি
করে কাটে সে। তারপর মায়ের দেহ থেকে ব্রেন ও হার্ট বার করে। তাতে রান্নার সমস্ত
মশলা মিশিয়ে কড়াইয়ে ভাজে। কড়াইতে ভাজার পর তরকারি বানিয়ে খায়।
সরকারি আইনজীবী দাবি করেন, মদ কিনতে টাকা দিতে নিষেধ করায় মাকে খুন করে
সুনীল। যে মা সামান্য পেনশনের টাকায় উগ্র স্বভাবের এই ছেলেকে নিয়মিত খাওয়াতেন।
প্রতিবেশী এক আট বছরের মেয়ে রক্তস্নাত সেই দৃশ্য দেখে ফেললে ঘটনাটি প্রকাশ্যে
আসে। সুনীলের এহেন চরিত্রের জন্য ইতিমধ্যেই তাকে ছেড়ে গিয়েছে স্ত্রী ও সন্তানেরা
।
এমন ব্যক্তির ক্ষমা প্রার্থনার আর্জি কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মন্তব্য
হাইকোর্টের। বলা বাহুল্য, ২০২১ সালের
জুলাইয়ে কোলহাপুর দায়রা আদালত দোষীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। নিম্ন আদালত সে সময়
মন্তব্য করে, এই ব্যক্তি নরখাদক।
এর সংশোধনের কোনও সম্ভাবনা
নেই। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ২৫ হাজার টাকার জরিমানা করা হয় তাকে। নিম্ন আদালতের এই
রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন জানায় সুনীল। এদিন বম্বে হাইকোর্টের ডিভিশন সেই
রায় বহাল রাখল।