পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ চিনে
মিলল নতুন এক ভাইরাসের সন্ধান। ওয়েটল্যান্ড ভাইরাস (ডব্লিউইএলভি)
নামে পরিচিত ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং এটি মস্তিষ্ক আক্রান্ত
করতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এটি স্নায়বিক রোগের কারণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন
চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা।
দ্য
নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণার রিপোর্ট অনুযায়ী, ভাইরাসটি প্রথম দেখা যায় চিনের জিনঝু শহরের ৬১ বছর বয়সী এক
রোগীর শরীরে, ২০১৯ সালের জুন মাসে।মঙ্গোলিয়ার
জলা এলাকায় ‘টিক’ বা ‘এঁটেল’ পোকার কামড় খাওয়ার পাঁচ দিনের মাথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই
ব্যক্তি। রোগীর জ্বর আসে, মাথা ব্যথা হয়, বমি হয় এবং এন্টিবায়োটিক দিয়েও এসব উপসর্গের উপশম হয়নি। টিক বা এঁটেল পোকার মাধ্যমে বেশ কিছু রোগ মানুষের দেহে
সংক্রমিত হয়। এর মাঝে ডব্লিউইএলভি ছাড়াও উল্লেখযোগ্য একটি রোগ হলো ক্রিমিয়ান-কঙ্গো
হেমোরেজিক ফিভার।
জিনঝু
শহরে প্রথম ওয়েটল্যান্ড ভাইরাসের দেখা পাওয়ার পর গবেষকরা উত্তর চিনে এনিয়ে বিশদ
তদন্ত করেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৪ হাজার ৬০০ এঁটেল পোকা সংগ্রহ করেন তারা। এসব পোকার মাঝে প্রায় ২ শতাংশের মধ্যে ডব্লিউইএলভি ভাইরাসের
জীনগত উপাদান পাওয়া যায়। এই ভাইরাসটির আরএনএ আরও কিছু প্রাণীর শরীরে পাওয়া যায়, যেমন ভেড়া, ঘোড়া, শুকর এবং কিছু ইঁদুরজাতীয় প্রানী।
ওই
গবেষকরা উত্তর চিনের বাসিন্দাদের থেকে রক্তের নমুনাও সংগ্রহ করেন। দেখা যায়, প্রতি ৬৪০ জন মানুষের মাঝে ১২ জনের শরীরে ওই ভাইরাসের
এন্টিবডি আছে। এছাড়া এঁটেল পোকার কামড়ে আক্রান্ত এমন ২০ জন রোগী পাওয়া যায়, যাদের শরীরে ভাইরাসটি আছে।
এসব
রোগীর জ্বর, দুর্বলতা, মাথাব্যথা, বমি এবং ডায়ারিয়ার উপসর্গ ছিল।
এমনকি রক্তে অতিরিক্ত শ্বেত রক্তকণিকার উপস্থিতি থাকার কারণে এদের একজন রোগী কোমায়
চলে যান। পরীক্ষাগারে গবেষণায় দেখা যায়, ভাইরাসটি মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করতে সক্ষম এবং
এতে মৃত্যুও হতে পারে। তবে ঠিক সময়ে যথাযথ চিকিৎসার পর সব রোগীই সেরে ওঠেন।