গাজা, ১২ সেপ্টেম্বর: গাজা ভূখণ্ডে আবারও একটি স্কুলে নৃশংস হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। তাদের অভিযোগ, গাজার বিভিন্ন হাসপাতাল, স্কুল, ধর্মীয়স্থান ও শরণার্থী শিবিরে লুকিয়ে রয়েছে হামাস যোদ্ধারা। তাই এ স্থানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করছে তেল আবিব। হামাস যোদ্ধাদের নির্মূল করতে গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের কাছে অবস্থিত রাষ্ট্রসংঘের আল-জাউনি প্রিপারেটরি বয়েজ স্কুলে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। দুটি বেসামরিক বসতবাড়িতেও হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৪ ফিলিস্তিনি যাদের ১৯ জনই নারী।
প্রাণ গিয়েছে নিষ্পাপ শিশুদেরও। গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর তথ্য মতে আহতের সংখ্যা ১৮। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হামলায় নারী ও শিশুদের দেহ ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে গেছে। ইসরাইলের লাগাতার হামলার ফলে স্কুলটিতে ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছিল এবং স্কুলটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
আল জাজিরা বলছে, নিহতদের মধ্যে ছয়জন ইউএনআরডব্লিউএ-এর কর্মী। তাদের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রের পরিচালকও রয়েছেন। সংস্থাটি বলেছে, গত ১১ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে একক কোনো হামলার ঘটনায় এটিই তাদের কর্মীদের সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা। এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চলছে। ভূখণ্ডটির স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস মধ্যস্থতাকারীদের বলেছে, তারা কোনো পক্ষের কাছ থেকে কোনো নতুন শর্ত ছাড়াই মার্কিন-প্রস্তাবিত ও রাষ্ট্রসংঘ-সমর্থিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে প্রস্তুত।
অন্যদিকে মঙ্গলবার দক্ষিণ গাজার সবচেয়ে বড় শহর খান ইউনুস ও আল-মাওয়াসি শহরে ভয়াবহ আঘাত হেনেছিল ইসরাইলি সেনারা। গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ওই এলাকাগুলোকে নিরাপদ জোন হিসাবে চিহ্নিত করে শরণার্থী শিবির তৈরি করা হয়েছিল। আশ্রয় নিয়েছিলেন ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। ওই হামলায় সেখানে মৃত্যু হয় অন্তত ৪০ জনের। গাজায় ইসরাইলের হামলায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৪১ হাজার ১১৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আরও ৯৫ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। অঞ্চলটির স্বাস্থ্য মন্ত্রক এ তথ্য জানিয়েছে। গাজার পাশাপাশি এখন ইসরাইল ভয়াবহ হামলা চালাচ্ছে পশ্চিম তীরেও। তেল আবিবের অভিযোগ, বহু হামাস যোদ্ধারা গাজা থেকে পালিয়ে পশ্চিম তীরের নানা শহরে ঘাঁটি গেড়েছে। তাই হামাসকে নির্মূল করতে অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইল।