পুবের কলম প্রতিবেদকঃ ক্যান্সার এক মারণরোগ। তবে সঠিক চিকিৎসা করা হলে
সহজেই এই মারণরোগকে জয় করা সম্ভব। তেমনই ক্যান্সার চিকিৎসায় দিশা দেখিয়েছে কলকাতার নীলরতন
সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসাপাতাল। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত
ছেলে-মেয়ে ও শিশুদের সঠিক চিকিৎসা করে নতুন জীবন ফিরিয়ে দিচ্ছে এনআরএস। হাসপাতালের চিকিৎসক এবং
স্বাস্থ্যকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে প্রায় তিনশো রোগীকে মারণরোগ থেকে রক্ষা করেছেন। নতুন জীবন ফিরে পেয়ে হাঁসি
ফুটেছে বহু বাবা-মা’য়ের মুখে। তাঁরা প্রত্যেককেই চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলছেন,
“সন্তানকে বাঁচাতে কোথায় না ছোটাছুটি করেছি। হন্যে হয়ে অনেক হাসপাতাল
ঘুরে পরে এনআরএস হাসপাতালে চিকিৎসা করাই। এখানকার চিকিৎসকদের চেষ্টায়
আমাদের সন্তানরা নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে।“
বসিরহাটের বছর ন’য়ের নাসিম গাজি পরিবারের
একমাত্র সন্তান। হটাৎ পেটে ব্যথা নিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসায় উন্নতি
না হওয়ায় কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু করেন। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে
দেখা যায় ওই বালক ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। ভেঙে পড়ে গোটা পরিবার। তাঁর বাবা বলছেন,
“দিন আনি-দিন খাই। বিপুল টাকা খরচ করে বেসরকারি
হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর সাম্যর্থ ছিল না। এই সরকারি হাসপাতালের সুচিকিৎসায়
ছেলে এখন পুরোপুরি সুস্থ। তাকে নিয়ে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছি আমরা।“
সোমবার কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে হেমাটোলজি
বিভাগ এবং ক্যানকিডস, ন্যাশনাল সোসাইটি ফর চেঞ্জ
ফর চাইল্ডহুড ক্যান্সার ইন ইন্ডিয়া নামক এক এনজিওর যৌথ উদ্যোগে ‘চাইল্ডহুড ক্যান্সার সারভাইভার মিট‘ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এদিন উপস্থিত ছিলেন, এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ ও হাসাপাতালের প্রিন্সিপাল ডা. প্রীৎবরণ চক্রবর্তী, হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. তুফান কান্তি দোলুই, চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. রাজীব দে, স্বাস্থ্য ভবণের আধিকারিক ডা. শুভ্রাংশু দত্ত, ক্যানকিডস স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সিওও সুমিতা কৃর্তি সহ চিকিৎসক শ্রীকৃষ্ণা মণ্ডল
ও কল্যাণী সাহা বসু প্রমুখ। এছাড়াও এদিন ৩০০ জন ক্যান্সার জয়ী রোগীর সঙ্গে উপস্থিত
ছিলেন তাদের বাবা-মাও। ডা. তুফান কান্তি দোলুই বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “যে ক্যান্সার রোগীরা চিকিৎসায়
সুস্থ হয়েছে, তাদের মনোবল বাড়াতে এই অনুষ্ঠান। আমরা ক্যানকিডস-এর সঙ্গে অনেক বছর ধরে কাজ করছি।“ এছাড়াও ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য পশ্চিমবঙ্গে
‘পাসপোর্ট টু লাইফ‘ পরিষেবাও চালু করা হয় এদিন। ক্যানকিডস-এর সিওও সুমিতা কৃর্তির কথায়, “‘পাসপোর্ট টু লাইফ‘-এর মাধ্যমে রোগ থেকে সুস্থ ছেলে-মেয়েরা পরবর্তীতে সময়ে কোনও সমস্যা প্রকট হলে সহজেই
এই পরিষেবার মাধ্যমে চিকিৎসার পরামর্শ নিতে পারবেন।“