কলকাতাThursday, 3 October 2024
  1. আজকের শিরোনাম
  2. ইতিহাস-ঐতিহ্য
  3. ক্রাইম
  4. খেলা
  5. জেলা
  6. দেশ
  7. ধর্ম ও দর্শন
  8. পর্যটন
  9. ফোটো গ্যালারি
  10. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  11. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  12. বিনোদন
  13. বিশ্ব-জাহান
  14. ব্লগ
  15. ভ্রমণ

"কাকু আমার কি দোষ ছিল', বোলপুরে ফিরে দিল্লির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন কেষ্ট কন্যা সুকন্যা

mtik
October 3, 2024 6:30 pm
Link Copied!

দেবশ্রী মজুমদার, বোলপুর: দু’বছর জেলে থাকার পর সেই অনুব্রত মণ্ডল বাড়ি ফিরে ভাসলেন চোখের জলে। বাবার পাশে বসে চোখের জল মুছতে মুছে চলেছেন সুকন্যা।  তিনি দীর্ঘ দিন জেল হাজতে থেকেছেন। সদ্য তিহাড় থেকে মুক্তি পেয়েছেন। কিন্তু বাড়ি ফিরে আসেন নি। বাবার জন্য দিল্লিতে অপেক্ষা করেছেন। পরে বাবার জামিন হতেই তাকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। 

ফিরেই দিল্লির উপর দিলেন ক্ষোভ উগড়ে। কাঁদতে কাঁদতে উপস্থিত একজনকে উদ্দেশ্য করে বল উঠলেন, “কাকু আমার কি দোষ ছিল।দিল্লি জল্লাদরা এই কাজ করলো। ” 

রাজনীতি না করলেও এখন অনেকটাই পরিণত। সুকন্যা মণ্ডল কোন দিনই রাজনীতির ধারে পাশে ছিলেন না। একান্ত ভাবেই পড়াশোনা নিয়েই তার জীবন কাটতো। প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা হিসাবে যথেষ্ট রাশ ভারি দিদিমনি হিসাবে তার নাম ডাক ছিল। কিন্তু গোরু পাচার মামলায় তার নাম ছড়িয়ে যাওয়ার পর তাকেই গ্রেফতার করে সিবিআই। 

সেখানে আরও কয়েকজন ঘনিষ্ঠ লোকজনও ছিলেন। কথা চলছিল তাঁদের। হঠাৎই আবেগঘন হয়ে পড়েন সুকন্যা। কিছু একটা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন তিনি।সামনে বসে থাকা সুদীপ্ত ঘোষ, নলহাটির বিধায়ক রাজেন্দ্র প্রসাদ সিং, কে উদ্দেশ্য করে সুকন্যা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “কাকু আমার কি দোষ ছিল।”

মেয়ের এভাবে ভেঙে পড়া দেখে আর আবেগ ধরে রাখতে পারেননি এক সময় বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা হিসাবে পরিচিত অনুব্রত মণ্ডল। কান্না নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছিলেন অনুব্রত। তবে শেষ অবধি পারেননি। দু’হাত দিয়ে চেপে ধরেন চোখ।

পরে রাজেন্দ্র প্রসাদ সিং বলেন,” কেষ্ট দার কষ্ট হয়েছে খুবই। কিন্তু ঐ মেয়ে টা কি অন্যায় করেছিল বলুন তো? আজ ও আমাদের কাঁদতে কাঁদতে বলছে, কাকু আমার কি দোষ ছিল। দিল্লি জহলাদ রা এই কাজ করলো। ” 

কিন্তু বাবার ও নিজের জেল জীবন কাটানোর পর পরিনত সুকন্যা বাবার জামিনের জন্য দিল্লিতে উকিল দের সঙ্গে যোগাযোগ করে। টাকা পয়সার ব্যবস্থা করা সব কাজই একা হাতে সামলেছেন তিনি। দলের কাউকেই তেমন ভাবে পাশে পায় নি সুকন্যা। তাই একা লড়াই করতে করতে এখন সেই অনেক পরিণত। বাবা চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ এখন কন্যা সুকন্যার হাতেই অনেক খানি। বাবা কোন পথে যাবে। কি খাবে? কোথায় কার সঙ্গে কথা বলবে সব টাই ঠিক করে দেয় সুকন্যা। কেষ্ট ও ঠকে শিখে এখন মেয়ে কথা শোনে মন দিয়ে। এই নিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের দাদা ও সুকন্যার পাশে দাঁড়িয়েছেন।

তিনি বলেন, “আমাদের ঘরের মেয়ে টার লড়াই বলুন তো। ও তো রাজনীতির ধারে কাছে ছিলো না। শুধু ওর নামে কিছু টাকা রাখা আছ তাই ওর উপর এত অত্যাচার। কই জ্যোতিপ্রিয মল্লিকের মেয়ে নামে এর থেকে বেশি টাকা আছে ওকে তো কিছু করছে না।” 

২২ সালের ১১ অগস্ট বোলপুরে নীচুপট্টীর বাড়ি থেকেই গোরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। জামিন পেয়ে ২ বছর ১ মাস ১৩ দিন পর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন তিনি৷  সোমবার তিহাড় জেল ছেড়ে বেরোন অনুব্রত মণ্ডল। রাতের বিমানে দিল্লি থেকে কলকাতা ফেরেন। ভোরে দমদম বিমানবন্দরে নেমে গাড়িতে বোলপুর পৌঁছন। রাতেই তিহাড় জেল থেকে বেরিয়ে আসার সময় তার জন্য গেটের বাইরে অপেক্ষা করছিল কন্যা সুকন্যা মন্ডল ও বাড়ির কর্মী বিশ্বরূপ মন্ডল। 

এদিন সকাল ৯টার আগেই বোলপুরে পা রাখেন অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর মেয়ে সুকন্যা। পরনে সাদা পাঞ্জাবি-পাজামা। তাঁদের স্বাগত জানাতে সকাল থেকে নিচুপট্টির বাড়ি, পার্টি অফিসে দলীয় নেতা-কর্মীর ভিড়। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে। তাঁকে বীরভূমের বাঘ বলে সম্বোধন করেন সতীর্থরা। তাঁর জেলমুক্তি হলে বীরের সম্মানে ফেরাতে হবে বলে প্রকাশ্য সভামঞ্চে বলেন খোদ দলনেত্রী। দু’বছর জেলে থাকার পর সেই অনুব্রত মণ্ডল বাড়ি ফিরে ভাসলেন চোখের জলে। 
পৌঁছেই বাড়ির অফিসে বসেন। সঙ্গে ছিল মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলও।

এদিন নিচুপট্টির পার্টি অফিসে নিজের চেয়ারে বসে অনুব্রত মণ্ডল প্রায় ঘণ্টাখানেক বৈঠক করেন। কোর কমিটির সদস্য সুদীপ্ত ঘোষও ছিলেন সেখানে।পরে নলহাটির বিধায়ক রাজেন্দ্র প্রসাদ সিং, রাজ নগরের ব্লক সভাপতি সুকুমার সাধুরা ঘরে ঢুকতেই তাদের সঙ্গে কথা বলেন অনুব্রত। সেই সময় বাবার পাশেই ডান দিকে বসে ছিলেন মেয়ে 

সুকন্যা যে আগের থেকে অনেকখানি পরিণত সেকথা মেনে নিয়েছেন জ্যেঠু সুব্রত মন্ডল। তিনি বলেন, আজ ভাই বাড়ি আসার পর সুকন্যা ই ঠিক করেছে সুদীপ্ত ঘোষের বাড়ি থেকে কেষ্ট আর ওর দুপুরে খাবার আসবে। ভাই কে তো সবাই ব্যবহার করেছে। নিজেদের আখের গুছিয়ে নিতে। এখন তাদের কে যে ও ঢুকতে দেয়নি ঠিক করেছে।ও তো দেখলো দুর্দিনে কেউ নেই। “