তেলআবিব, ৮ আগস্ট:  ইসরাইল নাগাড়ে হামলা চালাচ্ছে গাজায়। বৃহস্পতিবারও তারা দক্ষিণ গাজায় নিরীহ বেসামরিক মানুষের উপর হামলা চালিয়ে ২৭ জনকে হত্যা করেছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯৭০০-তে। হানিয়াকে হত্যার পর শান্তিচুক্তি থমকে গেছে। নেতানিয়াহুর কার্যকলাপ দেখে বিশেষজ্ঞদের  অনুমান, এই হত্যালীলা চলবে। গাজার সব জমি দখল করে ইসরাইলি বসতি স্থাপন করাই এখন যায়নবাদীদের মূল লক্ষ্য হয়ে উঠেছে। 

এদিকে তারা হামাসকে হুমকি দেওয়াও বন্ধ রাখেনি। ইরানের তেহরানে গুপ্তহত্যায় হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া নিহত হওয়ার পর তাঁর উত্তরসূরি হামাসের নতুন প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করার অঙ্গীকার করেছে ইসরাইল।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির নজিরবিহীন হামলার মূল  পরিকল্পনাকারী হিসেবে ধরা হয় তাঁকে। গত সপ্তাহে হানিয়া হত্যাকাণ্ডের পর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। এতে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ বাধার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। চরম উত্তেজনাকর এমন একটি সময়ে নিজেদের সামরিক শাখার প্রধান সিনওয়ারকে সংগঠনের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয় হামাস। 
 বুধবার ইসরায়েলের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ব্রিফিংয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল আত্মরক্ষায় বদ্ধপরিকর। সেনাবাহিনীতে নতুন নিয়োগ পাওয়া সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেদের রক্ষা ও আক্রমণ উভয়ের জন্য প্রস্তুত।’

অনুষ্ঠানে ইসরায়েলি সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হার্জি হেলভি নতুন হামাসপ্রধানকে (সিনওয়ার) খুঁজে বের করে তাঁর ওপর হামলা চালানোর অঙ্গীকার করেন। সেই সঙ্গে হামাসকে অন্য নেতা বাছাই করতে চাপ সৃষ্টি করার কথা জানান তিনি।  
২০১৭ সাল থেকে গাজায় হামাসের কর্মকাণ্ড পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন সিনওয়ার। কিন্তু ৭ অক্টোবর  ইসরায়েলে হামলার পর থেকে তাঁকে আর দেখা যায়নি। হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, সিনওয়ারকে সংগঠনের প্রধান করার মধ্য দিয়ে এ বার্তাই দেওয়া হয়েছে যে হামাস তার প্রতিরোধ আন্দোলন  থেকে পিছু হটবে না। লেবাননে হামাসের মিত্র সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহও সিনওয়ারের নিয়োগকে স্বাগত  জানিয়েছে। হিজবুল্লাহ বলেছে, হামাসের নেতা ও কর্মকর্তাদের হত্যা করে নিজেদের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে শত্রুরা। 
বিশ্লেষকদের ধারণা, সিনওয়ার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় অন্যদের চেয়ে বেশি অনিচ্ছুক এবং তিনি ইরানের কাছে হানিয়ার চেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ। এসআইটিই (সাইট) ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক রিটা কাৎজের মতে, হানিয়া হত্যাকাণ্ডে গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা যদি কম হয়ে থাকে, তবে  সিনওয়ারের অধীনে এ সম্ভাবনা হয়তো আরও কম। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সাংবাদিকদের বলেন, যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ কার্যকরে সহায়তা করার বিষয়টি এখন সিনওয়ারের ওপর নির্ভর করছে।