উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, সুন্দরবন : বিজেপি শাসিত রাজ্যে গিয়ে খুন হওয়া বাসন্তীর এক পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়িতে শনিবার গেলেন স্থানীয় বিধায়ক, জেলা সভাধিপতি। এবার বিজেপি শাসিত রাজ্য হরিয়ানায় গো রক্ষকদের দ্বারা পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠলো এরাজ্যের সুন্দরবনের এক পরিযায়ী শ্রমিককে।গত ২৭ আগস্ট ঘটনাটি ঘটেছে হরিয়ানায়। অভিযোগের আঙুল স্থানীয় ‘গো রক্ষা’ কমিটির দিকে।
হরিয়ানার বধরা থানায় এবিষয়ে একটি অভিযোগ ও দায়ের হয়েছে।জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগণার সুন্দরবনের বাসন্তী থানা এলাকার বাসিন্দা সাগির মল্লিক পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে হরিয়ানায় কাজ করতে গিয়েছিলেন।
গত ২৭ আগস্ট তিনি গো মাংস ভক্ষণ করেছেন এই সন্দেহে তাঁকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর তদন্তে নেমে হরিয়ানার পুলিশ আট জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানা গিয়েছে। মৃত সাগিরের শ্যালক সুজাউদ্দিন সরদার শনিবার বাসন্তির বাড়িতে দাঁড়িয়ে বলেন,সাগির কখনই গো মাংস ভক্ষণ করেননি বা আমাদের পরিবারের কেউ গরুর মাংস ভক্ষণ করেন না।
শুক্রবার সাগিরের কফিনবন্দি দেহ বাসন্তিতে তাঁর বাড়িতে পৌঁছায়। এদিন বিকেলে তাঁকে কবরে সমাহিত করা হয়।শনিবার মৃত সাগিরের বাড়িতে সমবেদনা জানাতে যান বাসন্তীর বিধায়ক শ্যামল নস্কর,জেলা পরিষদের সভাধিপতি নীলিমা বিশাল মিস্ত্রী,বাসন্তী ব্লক তৃনমূল কংগ্রেসের সভাপতি মিন্টু গাজী,বাসন্তী পঞ্চায়েত প্রধান শ্রীদাম মন্ডল।
এদিন মৃতের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে বাসন্তীর বিধায়ক শ্যামল নস্কর বলেন,বিজেপি শাসিত রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে খুন হলো আমার বিধানসভার এক সংখ্যালঘু ভাই।আমরা এই ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক এই আশা রাখবো হরিয়ানা রাজ্যের কাছে।আমরা মৃতের পরিবারের পাশে আছি।
এবিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদ মৃত সাগিরের ভাই বাবুর আলি মল্লিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে। মৃত সাগিরের বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা মা ছাড়াও আছে ভাই, বোন এবং স্ত্রী ও তিন বছরের একটি সন্তান। বাসন্তি পঞ্চায়েতের প্রধান শ্রীদাম মণ্ডল এদিন জানান, পশ্চিমবঙ্গ থেকে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করতে অনেকেই বিভিন্ন রাজ্যে যান। কিন্তু এই ধরনের ঘটনায় তিনি স্তম্ভিত ও মর্মাহত। বিষয়টি তিনি স্থানীয় সাংসদ প্রতিমা মণ্ডলকে জানিয়েছেন যাতে এই ঘটনা সংসদে তুলতে পারেন জয়নগরের সাংসদ।আর এই ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে সারা রাজ্যে।