Sun, September 29, 2024

ই-পেপার দেখুন

বাবরি থেকে রামমন্দির (এই যাত্রাপথের দীর্ঘ সময়সূচি)

Puber Kalom

Puber Kalom

Published: 05 June, 2024, 04:33 PM
বাবরি থেকে রামমন্দির (এই যাত্রাপথের দীর্ঘ সময়সূচি)

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: মাঝে মাত্র তিনটি দিন। ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় উদ্বোধন হবে রামমন্দির। উদ্বোধক স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একজন রাষ্ট্রনায়ক কেন এহেন ভূমিকা পালন করছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে। যা নিয়ে আগেই অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে হিন্দু ধর্মের প্রধান চার পীঠের শঙ্করাচার্যরা। রামমন্দির নিয়ে রাজনীতিক ‘দাদাগিরি’ বলেও আখ্যায়িত করেছেন। তাঁরা জানান, ধর্মীয় ক্ষেত্রে এই ‘অনাচার’ ও ‘দাদাগিরি’ দেশের আগামী ভবিষ্যতের জন্য ঠিক নয়। রাজনৈতিক মহলের মতে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে নিজেদের নড়বড়ে আসন চাঙ্গা করতেই বিজেপি এহেন ‘আচারে’ মেতেছে। একদিকে প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে অসম্পূর্ণ মন্দিরের উদ্বোধন হবে, অন্যদিকে স্মৃতিতে চিরদিন তাজা থাকবে বাবরির ‘শাহাদাত’।

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর। ৩২ বছর আগে ‘শহিদ’ হয়েছিল অযোধ্যার বাবরি মসজিদ। কিন্তু বাবরি মসজিদ নিয়ে বিতর্ক, গণ্ডগোল যা-ই বলা হোক না কেন, সবই কিন্তু নয়ের দশকে শুরু হয়নি। বিবাদের সূত্রপাত তার বহু আগে। সিপাই বিদ্রোহের চার বছর আগে বাবরি মসজিদ নিয়ে প্রথম বিবাদের কথা উল্লেখিত  রয়েছে ইতিহাসের পাতায়। গত পাঁচ শতাধীতে কত বার কত রকম বাঁক নিল রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিতর্ক? কোন পথ ধরে তা পৌঁছল রামমন্দির নির্মাণের শিলান্যাস পর্যন্ত। প্রতিবেদনেও তা তুলে ধরা হল।

 

 

 

১৫২৮-১৫২৯: অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ তৈরি করেন মুঘল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মীর বাকি। বছর দু’য়েক আগেই ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জহিরুদ্দিন মুহাম্মদ বাবর।  তাঁর নামেই এই মসজিদের নামকরণ হয়।

 

১৮৫৩: ১৮৫৩ সালে সিপাই বিদ্রোহের চার বছর আগে বাবরি মসজিদকে কেন্দ্র করে প্রথম ধর্মীয় বিবাদের সূত্রপাত হয়।

 

১৮৫৯: মুঘল যুগের পতন হয়েছে। সিপাহি বিদ্রোহও শেষ।  ভারতে ব্রিটিশ রাজ সুপ্রতিষ্ঠিত। প্রথম ফৈজাবাদের জেলা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদের কাঠামোর বাইরে শামিয়ানা তৈরি করে রামলালার মূর্তি স্থাপনের অবেদন জানান মহন্ত রঘুবীর দাস। আর্জি খারিজ করে ব্রিটিশ আদালত। ধর্মীয় বিবাদ আয়ত্তের বাইরে চলে যাওয়ায় ছ’বছর পর ব্রিটিশ সরকার মসজিদের চারপাশ ঘিরে দেয়। ভিতরের অংশে মুসলিম সম্প্রদায় এবং বাইরের অংশে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়। প্রায় নব্বই বছর এইভাবেই ছিল সবকিছু।

 

 

১৯৩৪: ১৯৩৪ সালের মার্চে গো-হত্যার অভিযোগকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক হিংসায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল বাবরি মসজিদের কাঠামো। সে-সময় মসজিদ মেরামতির জন্য হিন্দুদের থেকে জরিমানা আদায় করে ব্রিটিশ প্রশাসন।

 

১৯৪৬: অখিল ভারতীয় রামায়ণ মহাসভা (হিন্দু মহাসভার একটি শাখা) বিতর্কিত জায়গার দখলের জন্য আন্দোলন শুরু করে।

 

১৯৪৯: স্বাধীনতার পরে নতুন মাত্রা পায় বাবরি সংঘাত। ১৯৪৯ সালের ২২  ডিসেম্বরের মসজিদের মূল গম্বুজের নীচে রাতের অন্ধকারে ‘অন্যায়ভাবে’ রামলালার মূর্তি স্থাপন করা হয়। মন্দির-পন্থীরা দাবি জানান, রামলালা প্রকট হয়েছেন। পরের দিন ফৈজাবাদ জেলার অযোধ্যা পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইনচার্জ পণ্ডিত রামদেও দুবে ওই ঘটনায় একটি এফআইআর দায়ের করেন অভিরাম দাস, রামসকল দাস, সুদর্শন দাস-সহ প্রায় ৬০ জনের বিরুদ্ধে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৭ (দাঙ্গা), ৪৪৮ (অবৈধ প্রবেশ), ২৯৫ (উপাসনাস্থলের অসম্মান) ধারায় অভিযোগ আনা হয়। গোটা ঘটনায় তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু অত্যন্ত দুঃখপ্রকাশ করেন। গোটা বিষয় নিয়ে দুই সম্প্রদায়ই আইনি মামলার পথে যায়। স্থাপত্যটিকে ‘বিতর্কিত’ তকমা দিয়ে চিরতরের জন্য বন্ধ করে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার।

 

 

১৯৫০: গোপাল সিমলা এবং মহন্ত রামচন্দ্র দাস ফৈজাবাদ আদালতে আলাদা আলাদা মামলা করে বিতর্কিত স্থানে রামলালার পুজোর অনুমতি চান।

 

১৯৫৯: বিতর্কিত জমির মালিকানা দাবি করে মামলা করে নির্মোহী আখড়া।

 

১৯৬১: উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদে বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহ। ইউপি সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড জায়গাটির দখল এবং মূর্তি অপসারণের জন্য মামলা দায়ের করে৷

 

১৯৮৪ সালে: বাবরির ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় সংযোজিত হয়। জাতীয় কংগ্রেসের পর এক নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান হয়। ভারতীয় জনতা পার্টি। তার সঙ্গে গোটা দেশে মাথাচাড়া দেয় হিন্দুত্ববাদ। লর্ড রামের জন্মভূমিকে অশুভ শক্তি থেকে ‘মুক্ত’ করার ডাক দেয় উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। আর তাদের নেতৃত্বে গঠিত হয় রামমন্দির কমিটি। তার পুরোধা করা হয় বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানিকে।

   

১৯৮৬-র (২৫ জানুয়ারি): ভক্তদের রামলালার দর্শনের অনুমতি দেওয়ার জন্য ফৈজাবাদ আদালতে আর্জি জানান আইনজীবী উমেশচন্দ পাণ্ডে।

 

১৯৮৬ (১ ফেরুয়ারি): ১ ফেব্রুয়ারি ফৈজাবাদের জেলা বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট কে এন পাণ্ডে রামলালা দর্শনের জন্য ভক্তদের সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন। রামভক্তদের জন্য খোলা হয় বিতর্কিত জমির প্রবেশপথের তালা। তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন রাজীব গান্ধি।

 

১৯৮৬ (৫ ফেব্রুয়ারি): এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া হয় মুসলিম সমাজে। ১৯৮৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি, দিল্লির জামা মসজিদের ইমাম বুখারি এবং সৈয়দ সাহাবুদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত হয় বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটি। মসজিদে নামাযের দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতিও শুরু হয়।

 

১৯৮৯ (১ জুলাই): বিতর্কিত জমিতে রামলালার মন্দির স্থাপনের আবেদন জানিয়ে ফের একটি মামলা দায়ের হয়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সহ-সভাপতি দেবকীনন্দন আগরওয়ালের আবেদনে সাড়া দিয়ে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চে শুনানির সিদ্ধান্ত হয়। এর দু’সপ্তাহের মধ্যে বিতর্কিত জমির অধিকার সংক্রান্ত সমস্ত মামলা স্থানান্তরিত হয় ইলাহাবাদ হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চে।

 

১৯৮৯ (১৪ আগস্ট): বিতর্কিত জমিতে স্থিতাবস্থা বহাল রাখার নির্দেশ দেয় ইলাহাবাদ হাইকোর্ট।

 

১৯৮৯-সালের নভেম্বরে বিতর্কিত এলাকার বাইরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শিলান্যাস অনুষ্ঠান হয়।

 

১৯৯০ (২৫ সেপ্টেম্বর): রামমন্দির আন্দোলনের ‘মুখ’ হিসেবে আবির্ভাব লালকৃষ্ণ আদবানির। ১৯৯০-এর ২৫ সেপ্টেম্বর গুজরাতের সোমনাথ মন্দির থেকে অযোধ্যার উদ্দেশে রামরথ যাত্রা শুরু করেন আদবানি। তিনি ঘোষণা দেন, ৩০ অক্টোবর  অযোধ্যা পৌঁছে করসেবার মাধ্যমে রামমন্দির নির্মাণের সূচনা করবেন। কিন্তু ২৩ অক্টোবর বিহারের মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব সমস্তিপুরে রথ আটকে আদবানিকে গ্রেফতার করেন।

 

১৯৯১: ১৯৯১ সালের জুনে পতন হয় মুলায়ম সরকারের। বিজেপি নেতা কল্যাণ সিংহ বিধানসভা ভোটে জিতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে ৭ অক্টোবর অযোধ্যায় বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি অধিগ্রহণ করেন। সেখানে শুরু হয় পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের আশ্রয়স্থল গড়ার উদ্যোগ। কিন্তু এর তিনদিনের মাথাতেই হাসিম আনসারির আবেদনের প্রেক্ষিতে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, বিতর্কিত জমিতে কোনও নির্মাণ চলবে না। মুসলমানদের শান্ত করার জন্য ধর্মীয় উপসনা স্থল আইন পাস হয়। এই আইনে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত যেসব ধর্মস্থান যে অবস্থায় ছিল তার চরিত্র বজায় থাকবে। কোনও পরিবর্তন করা যাবে না। বাবরি মসজিদ হারালেও আর অন্য কোনও মসজিদে আঘাত আসবে না এই আশ্বাস দেওয়া হয় মুসলমানদের।

 

১৯৯২ (৬ ডিসেম্বর): ১৯৯২ সালের ২৭ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিয়ে করসেবার অনুমতি দেওয়ার আবেদন জানায় কল্যাণ সিং সরকার। বাবরি মসজিদের নিরাপত্তার আশ্বাসও দেওয়া হয়। বিতর্কিত এলাকার বাইরে করসেবার অনুমতি দেয় শীর্ষ আদালত। ৬ ডিসেম্বরের করসেবার উপর নজরদারির জন্য পর্যবেক্ষক নিয়োগ করে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু প্রশাসনের আশ্বাসে ফল মেলে না।  ৬ ডিসেম্বর, ১৯৯২। ভারতের ইতিহাসের এক  তাৎপর্যপূর্ণ দিন। ভিএইচপি, বিজেপি এবং শিবসেনার সমর্থকরা চড়াও হয়ে গুঁড়িয়ে দেয় বাবরি মসজিদের কাঠামো। শুরু হয় রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা। প্রায় দু’হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ যায় এই দাঙ্গায়। কেন্দ্রে ছিল কংগ্রেস সরকার। সেদিনই উত্তরপ্রদেশে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে নরসিংহ রাও সরকার। বাবরি ধ্বংসের বিরুদ্ধে দু’টি পৃথক এফআইআর দায়ের হয়।  প্রথমটি ললিতপুরে, মসজিদ ভাঙায় অংশ নেওয়া অজ্ঞাতপরিচয় করসেবকদের বিরুদ্ধে। দ্বিতীয়টি রায়বরেলিতে, ঘটনার দিন রামকথাকুঞ্জের মঞ্চ থেকে প্ররোচনামূলক

বত্তৃতার অভিযোগ সংঘ পরিবারের আট নেতার বিরুদ্ধে; লালকৃষ্ণ আদবানি, মুরলীমনোহর জোশি, অশোক সিঙ্ঘল, গিরিরাজ কিশোর, উমা ভারতী, সাধ্বী ঋতম্বরা, বিনয় কাটিয়ার এবং বিষ্ণু হরি ডালমিয়ার নাম আসে এফআইআর-এ।

 

১৯৯৩ (৩ এপ্রিল): সংসদে আইন পাস করিয়ে অযোধ্যার বিতর্কিত জমির দখল নেয় কেন্দ্রীয় সরকার।

 

১৯৯৩ সালের ৫ অক্টোবর প্রাথমিক আট অভিযুক্ত-সহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে সিবিআই চার্জশিট পেশ করে। বাবরি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ, শিবসেনা প্রধান বালাসাহেব ঠাকরে, ন্যাসের মহন্ত নৃত্যগোপাল দাসের বিরুদ্ধে।

 

১৯৯৪: ঐতিহাসিক ইসমাইল ফারুকি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় একটি মসজিদ ইসলামের অবিচ্ছেদ্য অংশ নয়।

 

১৯৯৬: ১৯৯৬-এর জানুয়ারিতে সাপ্লিমেন্টরি চার্জশিটে আরও ন’জনকে অভিযুক্ত করা হয়। এর কয়েক বছর পরে সিবিআই আদালত চার্জ গঠন করার সিদ্ধান্ত নিলে সেই নির্দেশকে ইলাহাবাদ হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ জানান আদবানি, জোশিরা।

 

২০০২: এরই মধ্যে চলে জমির মালিকানা মামলাও। জমির আসল মালিক কে, তা জানতে শুরু হয় মামলা।

 

২০০৩ (১৩ মার্চ): মসজিদস্থলে আদৌ কোনও মন্দির ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া-কে ২০০৩ সালের মার্চে নির্দেশ দেয় ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। আসলাম ওরফে ভুরে মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, অধিগ্রহণকৃত জমিতে কোনও ধরনের ধর্মীয় কার্যকলাপ করতে দেওয়া হবে না। খনন করে দেখার পর এএসআই আদালতকে রিপোর্ট দেয় মসজিদস্থলের নীচে অ-ইসলামি ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গিয়েছে। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড এএসআই-এর রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ জানায়। একই বছর সেপ্টেম্বরে রায়বরেলির বিশেষ সিবিআই আদালত বাবরি ধ্বংস মামলা থেকে আদবানিকে রেহাই দেয়।

 

২০০৩ (১৪ মার্চ): সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য ইলাহাবাদ হাইকোর্টে দেওয়ানি মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন আদেশটি কার্যকর হওয়া উচিত।

 

কিন্তু ২০০৫ সালে সিবিআই আদালতের নির্দেশ খারিজ করে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট জানায়, আদবানির বিরুদ্ধে বিচার চলবে। ২০০৯-এর জুলাইয়ে লিবারহান কমিশন রিপোর্ট পেশ করে। ৯০০ পাতার রিপোর্টে ষড়যন্ত্রের কথা বলা হলেও কার্যত সেই অভিযোগ থেকে ক্লিনচিট দেওয়া হয় আদবানি, জোশিকে।

 

২০১০ (৩০ সেপ্টেম্বর): অযোধ্যা মামলার রায় দেয় ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। তিন বিচারকের বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের উপর ভিত্তি করে জানায়, বিতর্কিত জমি তিন ভাগে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া এবং রামলালা বিরাজমানের মধ্যে।

 

২০১১ (৯ মে): ২০১১-এর ৯ মে জমি ভাগ নিয়ে লখনউ বেঞ্চের সেই রায়ে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

 

২০১২-র মার্চে বাবরি ধ্বংস সংক্রান্ত সবগুলি মামলার শুনানি একসঙ্গে করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন হয় সিবিআইয়ের। তিন বছর শুনানির পরে বাবরি ধ্বংসের মামলা নিয়ে আডবানিদের বক্তব্য জানতে চেয়ে নোটিশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

 

২০১৭ (২১ মার্চ): দেশের প্রধান বিচারপতি জগদীপ সিং খেহর বলেন, আদালতের বাইরেই মীমাংসা করে নেওয়া হোক অযোধ্যা বিতর্কের।

 

২০১৭ (৭ আগস্ট): অযোধ্যা মামলার শুনানির জন্য তিন বিচারপতির বেঞ্চ গঠন করে সুপ্রিম কোর্ট।

 

২০১৭ (২০ নভেম্বর): উত্তরপ্রদেশ শিয়া সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড জানায়, অযোধ্যায় মন্দির বানালে আপত্তি নেই। পরিবর্তে লখনউতে মসজিদ বানিয়ে দেওয়া হোক।

 

২০১৭ (৫ ডিসেম্বর): প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি অশোক ভূষণ এবং বিচারপতি এস আবদুল নাজিরের বেঞ্চে আবার নতুন করে শুরু হয় অযোধ্যা মামলার শুনানি।

 

২০১৮ (২৯ অক্টোবর): নয়া প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে আবার নতুন করে তিন বিচারপতির বেঞ্চ গঠন হয়।

 

২০১৯ (৮ জানুয়ারি): প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে তৈরি হয় পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ। কারও সরে দাঁড়ানো, কারও অসুস্থতার কারণে সেই বেঞ্চে পরে কিছু পরিবর্তন হয়।

 

২০১৯ (৮ মার্চ): বিচারপতি এফএম কলিফুল্লা, আধ্যাত্মিক গুরু শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর এবং আইনজীবী শ্রীরাম পঞ্চুকে নিয়ে মধ্যস্থতা প্যানেল তৈরি করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

 

২০১৯ (২ আগস্ট): মধ্যস্থতার চেষ্টা ব্যর্থ হয়। সুপ্রিম কোর্টের  প্রধান বিচারপতি জানান, ৬ আগস্ট থেকে রোজ শুনানি হবে অযোধ্যা মামলার।

 

২০১৯  (১৮ সেপ্টেম্বর): মধ্যস্থতা কমিটিকে আবার আলোচনা শুরু করতে বলে সুপ্রিম কোর্ট। এ মাসের মধ্যে আলোচনা শেষ করার সময় বেঁধে দেওয়া হয়।

 

২০১৯ ( ১৬ অক্টোবর): প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেন, অনেক হয়েছে। আজই শেষ করতে হবে অযোধ্যা মামলার শুনানি।

 

২০১৯  (৯ নভেম্বর): সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় অযোধ্যায় নির্মিত বাবরির বিতর্কিত জমিতে হিন্দুদের মন্দির তৈরি হবে। বিকল্প পাঁচ একর জমি অন্যত্র দেওয়া হবে মুসলিম সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে।

 

২০১৯ ( ১২ ডিসেম্বর): অযোধ্যায় জমি বিবাদ মামলার রায় নিয়ে একাধিক আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট।

 

 

২০২০ (৫ ফেব্রুয়ারি): শ্রীরামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট গঠনে কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটের অনুমোদন দেওয়া হয়। রামমন্দির নির্মাণে তদারকির কাজে নিযুক্ত ছিল ওই ট্রাস্ট। লোকসভায় অনুমোদনের কথা ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির।

 

২০২০ (২৪ ফেব্রুয়ারি): অযোধ্যার সোহাওয়াল তহশিলে পাঁচ একর জমিতে মসজিদ গড়ার জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকার প্রদত্ত জমি গ্রহণ উত্তরপ্রদেশ সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের।

 

২০২০ (৫ আগস্ট): অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের আগে ভূমিপুজো করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর পর রূপার ইট দিয়ে রামমন্দিরের আনুষ্ঠানিক শিলান্যাস হয়। সেই রামমন্দিরেরই উদ্বোধন আগামী ২২ জানুয়ারি।

Leave a comment