পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: আরজি কর কাণ্ডে আজ শুনানি হল সুপ্রিম কোর্টের
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে। তদন্তের গতি
প্রকৃতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
আর জি কর কাণ্ড নিয়ে বিচারের দাবিতে উত্তাল গোটা দেশ। সেই
পরিস্থিতিতে আজ শীর্ষ আদালতের শুনানির দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ। পরবর্তী শুনানি
আগামী মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর। তার মধ্যেই সিবিআইকে ফের স্টেটাস
রিপোর্ট তলব।
শুনানি চলাকালে প্রধান বিচারপতি বলেন, দেহ যখন ময়নাতদন্তে পাঠানো হল তার চালান কোথায়? চালান ছাড়া দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো যায় না। চালান এই কারণেই
গুরুত্বপূর্ণ বুঝতে হবে, দেহের সঙ্গে আর কি কি পাঠানো হয়েছিল তা জানা যায়।
সুরতহালের পর ময়নাতদন্তের নথি কোথায়?
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় তীব্র
অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ৩ হাজার ৭৪৭টি
সিসি ক্যামেরা কাজ করে, তাহলে এই ধরনের ঘটনা হল কিভাবে?
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা বলেন, চালান না পেলে বুঝতে হবে, কিছু একটা হয়েছে।
রাজ্য আদালতে যেটা দিয়েছে, সেটি আমাদের দেওয়া হোক, এখানে লুকোবার
কিছু নেই। এদিকে সিবিআই জানায়, আমরা কোনও চালান
পাইনি।
রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল আদালতে এদিন পেশ করতে পারলেন
না।
সিবিআইকে ফের স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ প্রধান
বিচারপতির। পরবর্তী শুনানি মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর। তার মধ্যে
সিবিআইকে ফের তদন্তের স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
আইনজীবী ফিরোজ এডুলজির বক্তব্য, “বলা হচ্ছে, মৃতার পা ৯০
ডিগ্রি কোণে ছিল। হাঁটু ভাঙা না হলে এটা সম্ভব নয়।” ঘটনার এক মাস
পরেও মৃত্যুর সময় কেন জানা গেল না, তা নিয়েও প্রশ্ন
রয়েছে আইনজীবীর। হাসপাতালের শৌচালয়ের সব টাইলসও বদলে ফেরা হয়েছে বলেও সোমবার
আদালতে জানান এডুলজি। তাঁর দাবি, ফলে অভিযুক্তের
লুমিনেল পরীক্ষা করানো হলেও কিছু পাওয়া যাবে না।
সিবিআইয়ের তরফে সোমবার গুরুতর সংশয় প্রকাশ করা হয় আদালতে।
সিবিআইয়ের বক্তব্য, “এই ধরনের ঘটনার
ক্ষেত্রে প্রথম ৫ ঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমরা ৫ দিন পরে গিয়েছি। তখন
অনেক কিছুই পালটে গেছে। এডুলজিও প্রশ্ন তোলেন, এফআইআর দায়ের না
করে কী ভাবে তদন্ত শুরু হল? এফআইআর দায়ের নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। হতে পারে সেই তথ্য
নষ্ট করা হয়েছে।” জেনারেল ডায়েরি এন্ট্রি করার সময়ও ভুল বলে দাবি
এডুলজির।
আইনজীবী এডুলজি বলেন, এডুলজি বলেন, “দুপুর আড়াইটা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শুধুমাত্র ১০ বার
জিডি এন্ট্রি করা হয়েছে। পুরোটা পরে তৈরি করা হয়নি তো? অনেক রহস্য রয়েছে।” সেই সংশয়ের
প্রেক্ষিতে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, জুডিশিয়াল
ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সন্দেহ হলে তাঁর কাছে রিপোর্ট চাওয়া হোক।
সিবিআইয়ের তরফও আদালতে জানানো হয়, ফরেন্সিক রিপোর্ট
নিয়ে তাদের মনেও প্রশ্ন রয়েছে। তাই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সেটি এমসে পাঠাতে
চায়।
সোমবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি পর্বের শুরুতেই
স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিল সিবিআই। মুখবন্ধ খামে জমা পড়া স্টেটাস রিপোর্ট খতিয়ে
দেখেন প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
এদিন আর জি কর মামলায় দ্বিতীয় দফার শুনানি হয় প্রধান
বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রর
ডিভিশন বেঞ্চে।