Sun, September 29, 2024

ই-পেপার দেখুন

বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে বন্যা দুর্গত পরিস্থিতি নিয়ে যা বললেন মুখ্যমন্ত্রী

Bipasha Chakraborty

Published: 23 September, 2024, 06:22 PM
বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে বন্যা দুর্গত পরিস্থিতি নিয়ে যা বললেন মুখ্যমন্ত্রী

এস জে আব্বাস, পূর্ব বর্ধমান: দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলাগুলিতে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা সফর করছেন। সোমবার পূর্ব বর্ধমানের প্রশাসনিক সভায় প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে নানা বিষয়ে আলোচনা করেন।


উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ,মলয় ঘটক, প্রদীপ মজুমদার ,সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী ,স্বপন দেবনাথ, জেলাশাসক রাধিকা আইয়ার, পুলিশ সুপার আমনদীপ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার সহ বিভিন্ন অফিসার ,সাংসদ ও বিধায়ক গণ। তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি, সরকারি উদ্যোগ, রাজ্যের মানুষের জন্য তাঁর ভাবনাচিন্তার কথা ব্যক্ত করেন এবং কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দেন। তিনি অভিযোগ করেন, ঝাড়খন্ডে বৃষ্টি হলেই জল ছেড়ে দেয় বাংলায়। গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান, ফ্লাড কন্ট্রোল বোর্ড, ডিভিসি - তিনটিই কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তারা কোনো কাজ না করার ফলে লক্ষ লক্ষ  মানুষের ঘর ডুবে যাচ্ছে, কৃষি ক্ষেত্র ডুবে যাচ্ছে।


ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে তিনি বলেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান এর বিভিন্ন কাজে এখনই ৪০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে এবং ডিপিআর তৈরি করা হচ্ছে। এসব ব্যাপারে তিনি সব রাজনৈতিক দলের কাছে সচেতনতার বার্তা দেন। কেন্দ্রকে কটাক্ষ করে তিনি আরো বলেন, বড় বড় বিল্ডিং বানিয়ে, নিজেদের মূর্তি বানিয়ে যে টাকাটা আপনারা খরচ করেন, তার এক চতুর্থাংশ যদি আমরা পাই, তাহলে গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান ফ্লাড কন্ট্রোল আমরা ভালো করে করতে পারব।


বন্যা পরবর্তী উদ্ভূত পরিস্থিতি তে তিনি রাজ্য সরকারের ভূমিকা প্রসঙ্গে বলেন,  আগে কেউ খবরই রাখত না। আমরা মনিটরিং করি। সব ছুটি বাতিল করা হয়েছে। রিলিফ সেন্টার করা হয়েছে। ড্রাই প্যাকেট করা হয়েছে। তিনি  হাসপাতাল গুলিকে জ্বর সর্দি কাশি, ডায়রিয়া, সাপে কাটা সহ বিভিন্ন প্রকার জরুরী ঔষধ পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখারও নির্দেশ দেন। 


বাংলায় সরকারি প্রচেষ্টায় চাষের ব্যাপারে বিভিন্ন নতুন দিশার কথা বলেন । এ প্রসঙ্গে তিনি ড্রাগন ফল, ইলিশ মাছ, স্ট্রবেরি চাষ প্রভৃতির কথা বলেন। তিনি বলেন ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা শস্য বিমার টাকা পাবেন। ধান কেনাকাটায় যেন গাফিলতি না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক করেন। আরোও বলেন, জল কমলে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সমীক্ষা করবে পঞ্চায়েত। পূর্ত দপ্তর রাস্তার সমীক্ষা করবে। পঞ্চায়েত ডিপার্টমেন্ট কে বলা হয়েছে পাকা বাড়ি করার জন্য অর্ধেক কিস্তির টাকা ডিসেম্বরে ছাড়া হবে। মাইনোরিটি ডিপার্টমেন্ট থেকে ৬৫ হাজার বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ৫০ লক্ষ পাকা বাড়ি ১৩ বছরের তৈরি করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।


সংবাদমাধ্যমের  উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের দায়বদ্ধতা আছে। দায়িত্ব আছে। পাঁচটা কাজ করতে গেলে একটা কাজে কারো ভুল ভ্রান্তি হতে পারে। সেটা নিয়ে ন্যারোটিভ না বাড়িয়ে আসুন আমরা বন্যা ক্লিষ্ট মানুষের পাশে দাঁড়াই।বন্যা পরিস্থিতিতে আরো সক্রিয় কাজ করার আহ্বান জানান।


বাংলাবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি  বাংলার প্রতি বঞ্চনাকে না মানার জন্য সকলের কাছে আবেদন জানান। উৎসবের প্রাক্কালে তিনি কামনা করেন, দুর্যোগ কেটে যাক, দুর্ভোগ কেটে যাক, আসুক শান্তির আলো।

Leave a comment